• উদ্বোধনের পর এক যুগ ধরে পরিত্যক্ত, বেডরুমে পরিণত হয়েছে হিমঘর
    বর্তমান | ১৯ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে সব্জি রাখার একটি হিমঘর তৈরির পর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ২০০৯ সালে তৈরি হওয়া সেই হিমঘর পরিণত হয়েছে অনেকের বেড রুমে।


    সরকারি টাকা খরচ করে তৈরি হিমঘরটির চারপাশ ঘিরে ধরেছে জঙ্গল-আগাছা। ভিতরে থাকা ফ্রিজার, ইলেকট্রিক্যাল সরঞ্জামে জং ধরেছে। খাদ্যদ্রব্য রাখার অযোগ্য স্টোরেজটি। ফলে এই এলাকার ব্যবসায়ী ও কৃষকরা কোল্ড স্টোরেজে মালপত্র রাখার সুবিধা পান না। অশোকনগর পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের কল্যাণগড় বাজার সংলগ্ন ভগ্নপ্রায় এই হিমঘরটি শুধু কোনওরকমে টিকে আছে। সেখানে গিয়ে দেখা গিয়েছে, বাস টার্মিনাসের কিছু কর্মী রাতে স্টোরেজটিতে থাকেন। তাঁদের আস্তানা হয়ে উঠেছে এখানকার ঘরগুলি। বিছানা পেতে, মশারি টাঙিয়ে রাতে শোওয়ার ব্যবস্থা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বছরের পর বছর অব্যবহৃত কোল্ড স্টোরেজে থাকতে শুরু করেছেন সরকারি বাস টার্মিনাসের কিছু কর্মী। চারিদিক জঙ্গলে ঘিরে থাকায় পরিত্যক্ত এই স্টোরেজের ধারেকাছে যায় না বহু মানুষ। তার সুযোগে মৌরসিপাট্টা কায়েম করেছে অনেকে। সাধারণ মানুষের স্বার্থে তৈরি হওয়া এই হিমঘর আজ ধুঁকছে। এটি তৈরি হওয়ার পর কেটে গিয়েছে এক যুগেরও বেশি সময়। কিন্তু তা এখনও চালু হয় নি। 


    ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূল আনুষ্ঠানিকভাবে ফের উদ্বোধন করেছিল এই কোল্ড স্টোরেজটির। অভিযোগ, কয়েক মাস যেতে না যেতেই ফের বন্ধ হয়ে যায় সরকারি টাকায় তৈরি হিমঘর। দিব্যেন্দু দাস নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘বিক্রি না হওয়া সব্জি, ফল, মাছ হিমঘরে রাখা যেত। তবে সে সুযোগ নেই। ফলে এত দাম সত্ত্বেও ফেলে দিতে হয় সব্জি।’ রাজীব পণ্ডিত নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘মাঝে একবার হিমঘর চালু হয়েছিল। কিন্তু তা কিছুদিনের মধ্যে বন্ধ হয়ে গেল। সিপিএমের আমলে এটি তৈরি হয়েছিল। এটি চালু হলে খুব ভালো হয়।’ অশোকনগরের সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক সত্যসেবী কর বলেন, ‘আমাদের আমলে এটি তৈরি হয়েছিল। কাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার আগে পুরসভায় ক্ষমতা বদল হয়। কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সুবিধার জন্য তৈরি হয়েছিল হিমঘর। একবার ঘটা করে উদ্বোধন হলেও আজ জঙ্গল গজিয়েছে।’ অশোকনগর পুরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান প্রবোধ সরকার বলেন, ‘হিমঘর চালু করার পর যে ব্যক্তিকে লিজ দেওয়া হয়েছিল তিনি তা চালাতে পারেননি। ফলে বন্ধ হয়ে যায় পরিষেবা। আমরা চেষ্টা করছি পুনরায় হিমঘরটি চালু করার।’ পাশাপাশি হিমঘরটি বেডরুমে পরিণত হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার বাস টার্মিনাস করলেও কর্মীদের থাকার জায়গা নেই। আপাতত তাই হিমঘর চালু না থাকায় সেখানে জায়গা করে দেওয়া হয়েছে।’ স্থানীয়দের বক্তব্য, লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করে তৈরি সরকারি এই হিমঘর পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। অথচ পরিষেবা পাচ্ছেন না কৃষকরা। ব্যাপক দাম সত্ত্বেও পচে যাচ্ছে শাকসব্জি।
  • Link to this news (বর্তমান)