সেলুনে বচসার পর যুবককে থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে গেল পুলিশ, তারপর যা হল... ...
আজকাল | ১৯ জুলাই ২০২৪
আজকাল ওয়েবডেস্ক: মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গি থানার পুলিশ হেফাজতে এক ব্যক্তিকে নৃশংসভাবে মারধর করার অভিযোগ উঠল থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক কৌশিক পাল সহ আরও ২ পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ পুলিশি হেফাজতে মারধরের সময় তাঁর গোপনাঙ্গে লঙ্কা বেটে লাগিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের মারধরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে ওই ব্যক্তি বর্তমানে ডোমকল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
আহত এই ব্যক্তির নাম সাবির মণ্ডল। বাড়ি জলঙ্গি থানার সাহেবরামপুর কীর্তনীয়াপাড়াতে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ তারিখে সাবির মন্ডল চোয়াপাড়া ভক্তের মোড়ে প্রণব শীল নামে এক ব্যক্তির সেলুনে চুল-দাড়ি কাটতে যান। সেখানে কোনও একটি বিষয় নিয়ে হঠাৎই সাবিরের সঙ্গে প্রণব শীলের বচসা শুরু হয়।
জানা গিয়েছে, ঘটনার সময় জলঙ্গি থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক কৌশিক পালের গাড়ির ড্রাইভার শামীম মন্ডল সহ আরও কয়েকজন সিভিক পুলিশ কর্মী সেখানে উপস্থিত ছিলেন ।ঘটনাটি তাঁরা দেখতে পেয়ে হস্তক্ষেপ করেন এবং সাবির ও প্রণব দুজনকেই জলঙ্গি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
সাবিরের অভিযোগ, 'ছোট্ট একটি বিষয় নিয়ে প্রণব শীলের সঙ্গে বচসা হয়েছিল । তার কোনও অভিযোগ ছিল না, কিন্তু জলঙ্গি থানার ওসি-র ড্রাইভার শামিম মণ্ডল নিজের ক্ষমতা দেখানোর জন্য থানায় গিয়ে বলেন আমি নাকি বড়বাবুকে গালাগালি করেছি।'আরও অভিযোগ, 'এই ঘটনা শুনে থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক কৌশিক পাল ,একজন প্রবেশনারি সাব-ইন্সপেক্টর তাপস শীল সহ আরও কয়েকজন পুলিশ আধিকারিক আমাকে প্রচন্ড মারধর করেন। গত প্রায় ১০ মাস ধরে আমার পা ভাঙা রয়েছে ।পুলিশকে বারবার সে কথা বলা সত্ত্বেও তারা কোনও কথায় কর্ণপাত না করে আমাকে সকলের সামনে মারধর করতে থাকেন ।আমার গায়ে এবং গোপনাঙ্গে লঙ্কা বেটে তারা লাগিয়ে দেয়।'
১৬ তারিখে রাতেই তাকে পি আর বন্ডে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপরই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন শামিম। প্রথমে তাঁকে সাদিখানদিয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় । সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে ডোমকল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয় ।বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন শামিম।
তিনি বলেন, প্রণব শীলের তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ ছিল না ।কিন্তু পুলিশ জোর করে এখন তাকে অভিযোগ করতে বাধ্য করছে । গোটা বিষয়টি তিনি ইতিমধ্যেই মুর্শিদাবাদের এসপি সহ একাধিক শীর্ষ পুলিশ আধিকারিককে মেল করে জানিয়েছেন।
যদিও সাবিরের উপর কোনও অত্যাচার করা হয়নি বলে জানিয়েছেন জলঙ্গি থানার এক আধিকারিক। তিনি বলেন, সাবির ওই সেলুন দোকান মালিককে কাঁচি দিয়ে খুন করার চেষ্টা করেছিল। পুলিশ কর্মীরা তা দেখতে পেয়ে দু'জনকেই থানায় নিয়ে আসে। সেই সময় তৃণমূলের এক অঞ্চল সভাপতি মাসাদুল শেখ থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিককে ফোন করে শামিমকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলে। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের হওয়ায় তৎক্ষণাৎ তাকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি । রাতে তাকে পি আর বন্ডে ছেড়ে দেওয়া হয়।