বিদ্যুৎ বিভ্রাটের অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার দিনভর তপ্ত ছিল মালদার মানিকচক। শুক্রবারও থমথমে এনায়েতপুর সহ পার্শ্ববর্তী এলাকা। বৃহস্পতিবারের ঘটনার প্রতিবাদে এদিন সিপিআই(এম) ১২ ঘণ্টা বনধের ডাক দিয়েছিল মানিকচকে। এই প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীন) সম্ভব জৈন অবশ্য বলেন, 'দোকানপাঠ খোলা রয়েছে। রাস্তায় মানুষজন রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক।' পাশাপাশি বৃহস্পতিবারের ঘটনার পরে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে জানান তিনি। তাঁর কথায়, ‘এলাকায় পুলিশ নজরদারি চালাচ্ছে। এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক।’স্থানীয়দের দাবি, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে এলাকায় বিদ্যুৎ আর যায়নি। ভোল্টেজও বেশি। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের অভিযোগে উত্তাল হয়ে ওঠে মানিকচক এলাকা। প্রতিবাদ জানাতে এনায়েতপুর অঞ্চল সহ ১০ জায়গায় রাস্তা অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সরাতে যায়। কিন্তু, এরপরেই পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। মারধর করা হয় পুলিশকর্মীদের। সন্ধ্যায় জেলা পুলিশের তরফে জানানো হয়, আপাতত নিয়ন্ত্রণে রয়েছে পরিস্থিতি। রাস্তার অবরোধও তুলে নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার এলাকা থমথমে। নতুন করে যাতে কোনও অশান্তি ছড়িয়ে না পড়ে সেই কারণে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এদিন এলাকাবাসী বলেন, 'বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আর নতুন করে সেখানে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কোনও ঘটনা ঘটেনি।’ ফলে তাঁদের আন্দোলন সফল বলেই দাবি করছেন এলাকাবাসী।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে এলাকায় বিদ্যুৎ বণ্টণ কোম্পানির তরফ থেকে মাইকে প্রচার করে জানানো হয়েছিল, ৩৩ হাজার কেভি লাইনে সমস্যা হওয়ার কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা হবে। কিন্তু, তা ঠিক হয়নি বলেই দাবি ছিল স্থানীয়দের। এরই প্রতিবাদে সরব হয়েছিল এলাকাবাসী। যদিও বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ বিভ্রাটের অভিযোগে যেভাবে এলাকা উত্তাল হয়েছিল তাতে কিছুটা বিস্মিত পুলিশ প্রশাসন। এর নেপথ্যে বহিরাগত বা কোনও রাজনৈতিক ইন্ধন রয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানিয়েছিলেন, ঘটনার জন্য রাজ্য বিদ্যুৎ দপ্তর দায়ী নয়। রাজ্যের কোথাও লোডশেডিং হয় না। মানিকচকে বিদ্যুৎ পরিষেবায় আধুনিকীকরণের কাজ করা হচ্ছে। ৮৯টি টাওয়ার বসানোর উদ্য়োগ নেওয়া হয়েছে। তার মধ্য়ে ৮৬টি টাওয়ার বসানো হয়েছে। ৩টির ক্ষেত্রে জমি মালিকরা সমস্যা করছেন। একাধিকবার এই নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু, সমস্যা মেটেনি। আর সেই কারণে বিদ্যুৎ পরিষেবায় ব্যাঘাত ঘটছে। মালদার জেলাশাসকও একই কথা বলেছিলেন। যদিও তিনি বলেন, 'এই তিনটি টাওয়ার বসানোর ক্ষেত্রে সমস্যা মিটে গিয়েছে। শুক্রবার থেকে কাজ শুরু হবে।'