• গঙ্গা ভাঙন নিয়ে কেন মামলা করেছেন? রাস্তায় ফেলে আইনজীবীকে মারধর, আগেও হয়েছিল হামলা...
    আজকাল | ১৯ জুলাই ২০২৪
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: মুর্শিদাবাদ জেলার গঙ্গা নদীর ভাঙন সমস্যার স্থায়ী সমাধান নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করার জন্য এক আইনজীবীকে মারধর করার অভিযোগ উঠল কিছু অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। আহত ওই আইনজীবীর নাম মাসুদ শেখ। তাঁর বাড়ি মুর্শিদাবাদের সুতি থানার অন্তর্গত কাশিমনগর-গাজীপুর গ্রামে। উল্লেখ্য, গত কয়েক বছরে মুর্শিদাবাদ জেলার সামশেরগঞ্জ ব্লক-সহ সুতি এবং ফারাক্কা ব্লকের কিছুটা অংশে গঙ্গা নদীর ভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। রাজ্য সরকারের এই ভাঙন প্রতিরোধের জন্য ইতিমধ্যেই প্রায় ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।

    আহত ওই আইনজীবী বলেন, 'শুক্রবার ভোরে আমি কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদের নিমতিতা স্টেশনে এসে পৌঁছই। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে নিজের গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলাম। সেই সময় রাস্তার ধারে দু'জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি আমাকে দাঁড় করায় এবং বন্দুক দেখিয়ে আমাকে একজনের সাথে ফোনে কথা বলার নির্দেশ দেন।'  তিনি বলেন, 'ফোনের অপর প্রান্তে থাকা এক মহিলা কন্ঠ নিজেকে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি রুবিয়া সুলতানা বলে দাবি করে আমাকে হুমকি দেন-আমি যদি কলকাতা হাইকোর্ট থেকে আমার জনস্বার্থ মামলাগুলো তুলে না নিই তাহলে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে। কেউ আমাকে বাঁচাতে পারবে না। এরপর ফোনের অপরপ্রান্তে থাকা মহিলা কণ্ঠস্বরকে আমি জানাই গোটা বিষয়টি পুলিশকে অভিযোগ করব। তখনই ওই দুই দুষ্কৃতি আমাকে বন্দুক দিয়ে প্রচন্ড মারধর করে।'

    ওই আইনজীবী বলেন, 'আমি চিৎকার করতে থাকলে কয়েকজন আমাকে বাঁচানোর জন্য ছুটে আসেন। সেইসময় দুই দুষ্কৃতী পালিয়ে যায়। এরপর পরিবারের লোকেরা আমাকে উদ্ধার করে মহিশাইল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।' মাসুদ দাবি করেন, 'মুর্শিদাবাদ জেলায় গঙ্গা নদীর ভাঙন সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য এবং আরও কয়েকটি বিষয় নিয়ে জনস্বার্থ মামলা করায় এ বছর ৬ ফেব্রুয়ারি আমার উপর হামলা হয়েছিল। ২৩ মে মুর্শিদাবাদ জেলার এক বিধায়ক আমাকে ফোনেও হুমকি দিয়েছিলেন। গোটা বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্টের নজরে আনা হলে কোর্ট নির্দেশে দেয় মুর্শিদাবাদ জেলাতে গেলে আমাকে আগে থেকেই সুতি থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক এবং জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপারকে অবগত করতে হবে এবং পুলিশি আমার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করবে। মুর্শিদাবাদ যাওয়ার আগে আমি ই মেল মারফত সুতি থানা এবং জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপারকে মুর্শিদাবাদে ফেরার বিষয়টি আগে থেকে জানিয়ে রাখলেও আমার জন্য কোনও রকম নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না। আমার উপর হামলার ঘটনার খবর পেয়ে সুতি থানার পুলিশ এসে বয়ান নথিভুক্ত করেছে। আমি একটু সুস্থ বোধ করলেই গোটা ঘটনাটি লিখিতভাবে জানিয়ে সুতি থানাতে অভিযোগ দায়ের করব।' তবে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায় জানিয়েছেন, 'গোটা বিষয়টি এখনও আমার জানা নেই ।'

     ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানার জন্য জেলা পরিষদের সভাধিপতি রুবিয়া সুলতানাকে একাধিকবার ফোন এবং মেসেজ করা হলেও এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাঁর উত্তর পাওয়া যায়নি।
  • Link to this news (আজকাল)