• সাদ্দামের সুড়ঙ্গ রহস্য ফাঁস, পুলিশি তদন্তে কী উঠে এল?
    এই সময় | ১৯ জুলাই ২০২৪
  • 'সুড়ঙ্গ রহস্য' নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই তোলপাড় বাংলা। প্রতারণা মামলায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির সাদ্দাম সর্দারের বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। সেই সময় তাঁর খাটের নীচে পাওয়া গিয়েছিল একটি সুড়ঙ্গ। আর তা কী কাজে ব্যবহৃত হত? সেই নিয়ে জল্পনা ছিল অন্তহীন। সাদ্দাম গ্রেফতার হওয়ার পর তাকে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদেই সুড়ঙ্গ রহস্যের যবনিকা পতন সম্ভব হয়েছে বলে সূত্রের খবর।সূত্রের খবর, পুলিশি জেরায় সাদ্দাম জানিয়েছে, মাগুর মাছ চাষের জন্য এই সুড়ঙ্গ তৈরি করা হয়েছিল। মাছ চাষের সঙ্গে যুক্ত ছিল সাদ্দাম। বাড়ির পাশেই খালের জলের ঢেউকে কাজে লাগিয়ে সুড়ঙ্গের মধ্যে মাগুর মাছ চাষের পরিকল্পনা ছিল তার। যদিও গ্রামবাসীদের আপত্তিতে তা শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। সাদ্দামদের বাবা মুকসেদ মূর্তির ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এই ব্যবসা থেকেই তিনি ১০ লাখ টাকা মুনাফা করেছিলেন এবং তারপর এই পেশা থেকে অবসর নেন।

    মুকসেদের দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে সাদ্দাম এবং তৃতীয় স্ত্রীর ছেলে সাহরুল। এই সাহরুল পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল বলে অভিযোগ। তার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। সাহরুল পেশায় দর্জি। শূন্যে গুলি ছোড়ার জন্য তার ব্যবহৃত বন্দুক এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বছর পাঁচেক আগে গ্রামের জনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে কিছুটা ফাঁকা জায়গাতে গিয়ে জমি কিনে বাড়ি করে সাদ্দাম। স্থানীয় রাজমিস্ত্রিদের দিয়েই তৈরি হয়েছিল এই বাড়ি। সেই সময় সুড়ঙ্গে মাছ চাষের বিষয়টি জানতে পেরে প্রবল আপত্তি তুলেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারপর থেকেই অব্যহৃত অবস্থায় সুড়ঙ্গটি পড়েছিল, পুলিশি জেরায় এমনটাই জানিয়েছে সাদ্দাম।

    সূত্রের খবর, জেরায় সাদ্দাম জানায়, পুলিশের উপর হামলা চালানোর পর ওই খালে রাখা ডিঙি ব্যবহার করেই এলাকা ছাড়ে সে। এরপর সারাদিন করলা ক্ষেতে লুকিয়েছিল সাদ্দাম। অন্ধকার নামতেই পায়ে হেঁটে চুপরিঝাড়ার উদ্দেশে রওনা দেয় সে।

    চুপড়িঝাড়া গ্রামের বাণীরধল এলাকায় একটি আলাঘরে আশ্রয় নেয় সাদ্দাম। তা মান্নান শেখের, যিনি ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটে লড়েছিলেন সিপিআই(এম)-এর হয়ে। মাছ চাষের সঙ্গে যুক্ত মান্নান খান সাদ্দামের পূর্বপরিচিত। ভৌগলিক কারণেই এই জায়গা অনেক বেশি নিরাপদ ছিল সাদ্দামের কাছে, মনে করছেন তদন্তকারীরা। কারণে একমাত্র সাইকেল, বাইক বা পায়ে হেঁটে সেখানে পৌঁছনো সম্ভব। গাড়ি নিয়ে ওই এলাকায় যাওয়া যেত না। পাশাপাশি আলাঘরের পাশেই ছিল নদী। ফলে পুলিশ এলে সেই জলপথ দিয়ে পালানো সম্ভব ছিল। যদিও শেষরক্ষা হয়নি। পুলিশ গ্রেফতার করে সাদ্দামকে। উল্লেখ্য, কুলতলির প্রতারণার ঘটনায় আরও দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম ইমরান আলি মোল্লা এবং শাজাহান মোল্লা।
  • Link to this news (এই সময়)