দয়া করে আমায় পিএইচডিটা করতে দিন, 'মাওবাদী' অর্ণবের বিশেষ অনুরোধ ...
আজকাল | ২০ জুলাই ২০২৪
আজকাল ওয়েবডেস্ক: দয়া করে আমাকে পিএইচডিটা করতে দিন। আপনাদের কাছে অনুরোধ। শুক্রবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে এই অনুরোধ জানালেন 'মাওবাদী' নেতা অর্ণব দাম। দলে তাঁর পরিচিতি 'বিক্রম' নামে। ইতিহাস নিয়ে গবেষণার জন্য সোমবার তাঁর কাউন্সেলিং হওয়ার পর শুক্রবার তাঁর ভেরিফিকেশন হয়। এজন্য তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে অর্ণব বলেন, 'আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ পিএইচডিটা আমায় করতে দিন। তারপর আবার আসবেন। আপাতত আমায় পড়াশোনাটা করতে দিন।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সৈয়দ তানভীর নাসরিন জানিয়েছেন, 'ভেরিফিকেশন কমপ্লিট হল। আগামী সপ্তাহ থেকেই ক্লাস শুরু হবে। এখন যেহেতু অর্ণব বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার্ড স্টুডেন্ট তাই লাইব্রেরিতে পড়াশোনা করতে কোনও বাধা নেই।' গত ২০১০ সালে শিলদায় ইএফআর ক্যাম্পে মাওবাদীদের একটি দল বড়সড় হামলা চালায়। ওই হামলায় ২৪ জন ইএফআর জওয়ান খুন হন। লুট হয় বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র। হামলার পান্ডা হিসেবে অর্ণবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বিচারে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয়। সংশোধনাগারে বসেই পড়াশুনা চালিয়ে যান অর্ণব। ঠিক করেন ইতিহাস নিয়ে তিনি পিএইচডি করবেন। সেইমতো বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ২৬ জুন পরীক্ষা দেন। কিন্তু পরীক্ষায় প্রথম হলেও তাঁর ভর্তি আটকে যায়। গত ৯ জুলাই ভর্তির বিষয়টি নির্ধারিত হলেও ৮ জুলাই কর্তৃপক্ষ হঠাৎ বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায় ভর্তি আপাতত পিছিয়ে দেওয়া হল। পাশাপাশি রাজ্যের কারা দপ্তরের কাছে অর্ণব সম্পর্কে কয়েকটি তথ্য জানতে চায় বিশ্ববিদ্যালয়।
অন্যদিকে ভর্তি না হতে পারার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে হুগলি সংশোধনাগারে দু'দিনের প্রতীকী অনশন শুরু করেন অর্ণব। এগিয়ে আসেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ ও মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর। পাশে দাঁড়ায় তৃণমূল ও সিপিএমের ছাত্র সংগঠন। সিদ্ধান্ত হয় অর্ণবকে পাঠানো হবে বর্ধমান সংশোধনাগারে এবং তাঁর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে রাজ্য সরকার। ফলে বাধা কাটে অর্ণবের। ভর্তি হন তিনি। আপাতত বন্দুক, গুলি, অতীত। মাওবাদী অর্ণব এই মুহূর্তে মনোনিবেশ করবেন বইয়ের পাতায়।