অর্ণব আইচ: কোনও মামলায় আইনজীবী হিসেবে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা কি অপরাধ? এছাড়া সারদা মামলায় কী এমন ভূমিকা ছিল? চিদম্বরম-পত্নী নলিনী চিদম্বরমকে নিয়ে ফের আদালতে এসব প্রশ্নের মুখে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। শুক্রবার এই মামলায় নলিনী চিদম্বরমের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার চার্জশিটও গ্রহণ করল না ইডির বিশেষ আদালত।
সম্প্রতি সারদা মামলায় (Saradha Scam) প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরমের স্ত্রী নলিনীদেবীরবিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে ইডি। প্রথম দিন ব্যাঙ্কশাল আদালতের ইডির বিশেষ কোর্ট এই চার্জশিট গ্রহণ করেনি। বিচারকের প্রশ্ন ও ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের। সেদিন ওই চার্জশিট গ্রহণ করেনি আদালত। এদিন এই মামলার শুনানির দিন ছিল। ইডির আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র ও ভাস্করপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের আবেদনে জানান, একটি সংবাদমাধ্যম হস্তান্তর ঘিরে সারদা মামলার মূল অভিযুক্ত সুদীপ্ত সেন ও মনোরঞ্জনা সিংয়ের মধ্যে মউ স্বাক্ষরিত হয়। তা হয় ‘মধ্যস্থতাকারী’ নলিনীর উপস্থিতিতে। তার বদলে ১ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন নলিনী।
বিচারক ফের ইডিকে প্রশ্ন করেন, গত ২০১১-১২ সালে এই দুর্নীতি হয়। ২০২৪ সালে এই চার্জশিট পেশ করা হল কেন? উত্তরে ইডি জানায়, তদন্তের কাজে সময় লেগেছে। বিচারকের পালটা বক্তব্য, আইনের চোখে সবাই নিষ্পাপ। যতক্ষণ না অভিযোগ প্রমাণিত হচ্ছে, ততক্ষণ নলিনী চিদম্বরমকে (Nalini Chidambaram) দোষী কীভাবে বলা যাবে? ইডির মামলায় একজন আইনজীবী যখন পারিশ্রমিক নেন, তা কি অপরাধ? ওই টাকা কোনও দুর্নীতির কি না, তা কি সেই আইনজীবীর জানার কথা?
ইডির (ED) আইনজীবীর দাবি, তদন্তে যখন নলিনীর নাম উঠে আসে, তখন তাঁকে তলব করা হয়। কিন্তু তিনি তলবে সাড়া না দিয়ে প্রথমে চেন্নাইয়ের হাই কোর্টে যান। হাই কোর্ট তাঁকে সমনে সাড়া দিতে বলেন। তখন তিনি সুপ্রিম কোর্টে যান। শীর্ষ আদালত জানায়, ইডি যে কোনও পদক্ষেপ নিতে পারে। তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ হলে ইডির তলবে সাড়া দিতে পারতেন। ইডির আইনজীবী জানান, কলকাতার একটি অভিজাত হোটেলে নলিনী সুদীপ্ত সেনের (Sudipta Sen) সঙ্গে ‘সেবি’র তৎকালীন কয়েকজন আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করিয়ে দেন। সুদীপ্ত সেনকে রক্ষা করার জন্যই নলিনী এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন বলে ইডির দাবি। ইডির এই বক্তব্যের পরও বিচারক প্রশ্ন করেন, এই দুর্নীতিতে নলিনী চিদম্বরমের কী ভূমিকা? এদিনও আদালত ইডির চার্জশিট গ্রহণ করেনি। ইডিকে এই বিষয়ে আদালতকে সারসংক্ষেপ পেশ করার নির্দেশ দেন বিচারক। ২৫ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি।