মুকুটের জয়ে বাড়তি অক্সিজেন, ধর্মতলায় রেকর্ড জমায়েত-প্রস্তুতি
বর্তমান | ২০ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূলের জয়ধ্বজা উড়লেই একুশে জুলাই শহিদ দিবসে বিপুল জমায়েতের দাবি রেখেছিল ঘাসফুল শিবির। উপনির্বাচনে এই বিধানসভা কেন্দ্রটি দখলে আসতেই বাড়তি অক্সিজেন পেয়েছে নেতৃত্ব। দক্ষিণ নদীয়া থেকে ৪০ হাজারের বেশি কর্মী-সমর্থক নিয়ে গিয়ে রেকর্ড জমায়েত করার প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু করেছে সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। এরজন্য বুথ থেকে ব্লকস্তরের নেতাদের আলাদা আলাদাভাবে দায়িত্ব বণ্টন করা হয়। রানাঘাট দক্ষিণের পঞ্চায়েতগুলি থেকে বাড়তি ভিড় কীভাবে ধর্মতলা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে, তা নিয়েও চলছে বৈঠক ও পরিকল্পনা।
রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে পরাজয়ের পর মাত্র দেড় মাসের ব্যবধানে উপনির্বাচন। তাতে ব্যাপক পরিমাণ জনসমর্থন তৃণমূল নিজেদের দিকে ফেরাতে পেরেছে, তার প্রমাণ মিলেছে উপনির্বাচনেই। উপনির্বাচনে তৃণমূলকে সবথেকে বেশি লিড দিয়েছেন নোকারি পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা। ৫৯৪৬ ভোটে এই পঞ্চায়েতে এগিয়ে তৃণমূল। ৫৩৪২ ভোটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লিড দিয়ে আইশমালি পঞ্চায়েতের ব্যাপক সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূলমুখী হয়েছে। পাশাপাশি হিজুলি-১, শ্যামনগর, বৈদ্যপুর-১ ও ২, মাঝেরগ্রামের মতো পঞ্চায়েতগুলোতেও ব্যাপক জনসমর্থন কুড়িয়েছে ঘাসফুল শিবির। তালিকায় রয়েছে কুপার্স ক্যাম্পও। তাই এই এলাকাগুলো থেকে সবথেকে বেশি মানুষ এবারের শহিদ সমাবেশে ভিড় জমাবেন বলে আশাবাদী দল। রানাঘাট দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার একদিকে নবদ্বীপ থেকে কৃষ্ণগঞ্জ, অন্যদিকে হরিণঘাটা পর্যন্ত প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার কর্মী-সমর্থককে খাতায়-কলমে ট্রেনে ও বাসে চাপিয়ে ধর্মতলার সমাবেশে নিয়ে যাওয়া হবে বলে পরিকল্পনা রয়েছে নেতৃত্বের। এই ভিড়ের মধ্যে প্রায় ১০ হাজার লোক শুধুমাত্র রানাঘাট দক্ষিণ থেকেই থাকবেন বলে জানা গিয়েছে।
রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, এই সংখ্যাটা বাদেও বহু তৃণমূল সমর্থক নিজে থেকে ট্রেনে চেপে একুশে জুলাই ধর্মতলামুখী হবেন। উপনির্বাচনে জয়ের পর কর্মী সমর্থকদের মধ্যে বাড়তি উদ্দীপনা কাজ করছে। কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রম ছাড়া জয় সহজ হতো না। তাই এবার তাঁরাই চাইছেন গতবারের ভিড়ের সংখ্যা ছাপিয়ে দক্ষিণ নদীয়া থেকে রেকর্ড জমায়েত হোক। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ছোট-বড় বাস, লরি মিলিয়ে দুশোরও বেশি গাড়ির ব্যবস্থা করতে হচ্ছে এবছর। কর্মীদের কোন অংশকে বাসে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, আবার কত সংখ্যক কর্মী ট্রেনে যাবেন, রীতিমতো অঞ্চল ধরে ধরে সেই তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এজন্য বুথ সভাপতি, ব্লক সভাপতিদের বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। উপনির্বাচন শেষ হলেও যেন ব্যস্ততার শেষ নেই নেতাদের। মুকুটমণির হাত ধরে রানাঘাটে দক্ষিণে ঘাসফুল ফুটতেই একের পর এক কর্মিসভার মাধ্যমে দলীয় কর্মীদের রেকর্ড জমায়েত নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কুপার্স টাউন তৃণমূলের সভাপতি দিলীপ দাসের কথায়, এবারের উপনির্বাচনে জয়ের পিছনে মহিলা কর্মীদের বড় ভূমিকা ছিল। তাঁরা প্রত্যেকেই শহিদ দিবসে শামিল হওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন। বিশেষ করে কুপার্সের মহিলা ভোটাররা দিদিকে সামনে থেকে দেখবেন বলে আবদার করছেন। তাঁদের নিয়ে যাওয়ার জন্য আলাদাভাবে ব্যবস্থা করতে হচ্ছে।