মোবাইলে ‘গেম’ খেলার সময়েই দেওয়াল চাপা পড়ে যুবকের মৃত্যু
বর্তমান | ২০ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: বৃহস্পতিবার রাতে বাঁকুড়া শহরের নতুনচটি সারদাপল্লি এলাকায় দেওয়াল চাপা পড়ে এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম কিষান মালাকার(২০)। ঘটনায় দু’জন জখম হয়েছেন। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওইদিন রাতে কিষান তাঁর চার বন্ধুর সঙ্গে একটি বাড়ির সীমানা পাঁচিলের নীচে বসে গেম খেলছিলেন। আচমকা দেওয়ালের একাংশ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। তাতেই কিষান সহ বাকিরা চাপা পড়েন। জখম অবস্থায় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক কিষানকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাকি রোহিত মালাকার ও রাজেশ মালাকার মেডিক্যালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দু’জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়। ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। বাঁকুড়ার পুলিস সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, দেওয়াল চাপা পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। দু’জন জখম হয়েছেন। ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কিষানের বাড়িতে তাঁর বাবা, মা ও বিবাহিত দিদি রয়েছেন। কিষানের বাবা চন্দন মালাকার টোটো চালক। মা মিঠুদেবী পরিচারিকার কাজ করেন। কিষান দিনমজুরের কাজ করতেন। ওইদিন সন্ধ্যায় আনাজ কেনার জন্য মায়ের হাতে টাকাও দিয়েছিলেন। তারপর দিদির স্মার্টফোন নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে বাইরে যান।
শুক্রবার তাঁর মা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, প্রত্যেকদিন সন্ধ্যায় ছেলে বাড়ি থেকে বেরত। রাতে খাওয়ার সময় বাড়ি ফিরে আসত। ওইদিনও একইভাবে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। রাতে বাড়ি ফিরে খাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, তার আগে সব শেষ হয়ে গেল।
কিষানের বাবা বলেন, ওই পাঁচিলটি বেহাল ছিল। যা শুনেছি ছেলে পাঁচিলের দিকে মুখ করে বসেছিল। আচমকা পাঁচিলটি ভেঙে পড়ে। বাড়ি থেকে বেরনোই ওর কাল হল।
কিষানের সঙ্গে ওই রাতে ছিলেন তাঁর বন্ধু বিকাশ মালাকার। তিনি বলেন, আমরা রোজই ওখানে গিয়ে আড্ডা দিই। ওইদিনও একসঙ্গে বসেছিলাম। মোবাইলে গেম খেলছিলাম। হঠাৎ করে সাড়ে ৮টা নাগাদ পাঁচিলটি ভেঙে যায়। সকাল থেকে কিষানের সঙ্গে কাটালাম। রাতে যে ওকে হারাতে হবে ভাবিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা তাপস সিন্দাল বলেন, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে পাঁচিলটি বেহাল হয়েছিল। খুব দুর্ভাগ্যজনকভাবে দুর্ঘটনা ঘটে গেল। আর যাতে কেউ এভাবে বেহাল পাঁচিলের নীচে না বসে তা সবার নজর রাখা উচিত।
বাঁকুড়া পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার অমিত রুইদাস বলেন, দু’জন যুবক এখনও বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি আছে। তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে তদবির করা হয়েছে। আমরা পরিবারের পাশে আছি।