সংবাদদাতা, চাঁচল: সারাদিন দিনমজুরি করার পর রাতের খাবার খেয়ে ঘুমোতে যাচ্ছিলেন। পঞ্চায়েত সদস্যের ফোন পেয়ে আর ঘুমোনো হল না ত্রিলোচন হালদারের। ১৩ কিমি পাড়ি দিয়ে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে গিয়ে বিরল গ্রুপের রক্ত দিয়ে প্রাণ বাঁচালেন মহিলার। তাঁর এই কাজে মুগ্ধ হয়ে শুক্রবার চাঁচল ২ ব্লকের কানাইপুরে গিয়ে ফুল ও মিষ্টি দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বিডিও শান্তনু চক্রবর্তী। বিডিও বলেন, রক্ত দিয়ে মহিলার প্রাণ বাঁচিয়েছেন ত্রিলোচন। পঞ্চায়েত সদস্যের মুখ থেকে বিষয়টি জেনেই এসেছি।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে ভর্তি হন কানাইপুরের পুনম সাহা। বেলা গড়াতেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। অস্ত্রোপচারের জন্য রক্ত জোগানের কথা জানানো হয় পরিবারকে।
হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে পুনমের স্বামী সুশান্ত চৌধুরী জানতে পারেন ‘এবি’ নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত নেই। এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য বাপ্পাদিত্য সেনকে বিষয়টি জানাতেই তিনি রক্তদাতাকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে চলে আসেন। ত্রিলোচন রক্ত দেওয়ার পর সফল অস্ত্রোপচার হয় মহিলার।
চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার সুমিত তালুকদার বলেন, ওই রোগীর অস্ত্রোপচার হয়েছে। তিনি সুস্থ রয়েছেন।
ত্রিলোচনের মন্তব্য, আমার রক্তে একজন সুস্থ হয়েছেন দেখে ভালো লাগছে। রক্ত পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে মহিলার স্বামী বলেন, ত্রিলোচন ও বাপ্পাদিত্য পাশে না থাকলে বড় বিপদ হতে পারত।
গরম পড়তেই জেলার বিভিন্ন ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত সঙ্কটের খবর সামনে এসেছে। তবে বিরল গ্রুপের রক্ত ব্লাড ব্যাঙ্কে সঞ্চিত থাকে না বললেই চলে। তার জন্য বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, ক্লাব ও রাজনৈতিক দলগুলিকে শিবির করার বার্তা দিচ্ছে ব্লাডব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। চাঁচল ব্লাড ব্যাঙ্কের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট অবরিন্দ ঘরাই বলেন, নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত নেই। চলতি মাসে এলাকায় সাতটি শিবির হলেও সেভাবে নেগেটিভ রক্ত পাওয়া যায়নি।