অষ্টমের ছাত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন, চাঞ্চল্য হবিবপুরে
বর্তমান | ২০ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ ও সংবাদদাতা, হবিবপুর: অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠল হবিবপুরে।
বৃহস্পতিবার রাতের এ ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। ধৃতের নাম চন্দন সিং। বছর বাইশের ওই যুবকের বাড়ি হবিবপুরের সোলাডাঙা গ্রামে। পুলিসের দাবি, খুনের কথা স্বীকার করেছে ধৃত যুবক। সে জানিয়েছে, ধর্ষণের মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে সম্প্রতি ব্ল্যাকমেল করছিল ছাত্রীটি। তারই জেরে সে তাকে খুন করে।
ছাত্রীর বাবার অভিযোগ, খুনের আগে তাঁর মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়। এরপর পুকুরের জলে ডুবিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় তাকে। পরে মেয়ের দেহ তাঁর বাড়ির দরজার কাছে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত। যদিও ধর্ষণের বিষয়টি নিয়ে ময়নাতদন্তের আগে কিছু বলতে নারাজ পুলিস। মালদহের পুলিস সুপার প্রদীপকুমার যাদব জানিয়েছেন, ঘটনার রাতে বুলবুলচণ্ডী বাস স্টপ সংলগ্ন এলাকায় উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘোরাফেরা করছিল চন্দন সিং নামে ওই যুবক। তাকে দেখে এক সিভিক ভলান্টিয়ারের সন্দেহ হয়। এরপর টহলদারি ভ্যানের পুলিসকে ডেকে ওই যুবককে ধরিয়ে দেন সিভিক ভলান্টিয়ার। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনের বিষয়টি জানা যায়। তার কথামতো পুলিস ছাত্রীর বাড়ি গিয়ে দেহ উদ্ধার করে। পুলিস সুপার বলেন, ‘ধৃত যুবক জেরায় জানিয়েছে, তার সঙ্গে ওই ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ধর্ষণের মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ছাত্রী সম্প্রতি ওই যুবককে ব্ল্যাকমেল করছিল। সেকারণেই তাকে খুন করেছে।’
পুলিস সূত্রে খবর, ছাত্রীটির বাবা-মা মেলায় আইসক্রিম বিক্রি করেন। গত দু-তিন দিন হরিশচন্দ্রপুরে রথের মেলায় দোকান দিয়েছেন তাঁরা। সারাক্ষণ সেখানেই থাকছেন তাঁরা। ফলে আট বছরের ভাইকে নিয়ে বাড়িতে একাই ছিল ওই ছাত্রী। মৃত ছাত্রীর ভাই এদিন বলে, ‘রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে দিদি ও আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। আচমকা বাড়ির টিনের চালে ঢিল পড়ার শব্দ পাই। শব্দ শুনে আমরা বাড়ির বাইরে বের হই। কিন্তু চারদিকে অন্ধকার থাকায় দিদি আমাকে ঘরে যেতে বলে। আমি ঘরে ঢুকতেই কেউ একজন বাইরে থেকে দরজায় শিকল তুলে দেয়। আমি চিৎকার করতে থাকি। বেশ কিছুক্ষণ পর পাশের বাড়ির এক দাদা এসে শিকল খুলে আমাকে ঘর থেকে বের করে।’
মৃত ওই ছাত্রীর এক খুড়তুতো দাদা বলেন, ‘পুলিস আমাকে রাত ২টো নাগাদ ঘুম থেকে ডেকে তোলে। পুলিসের সঙ্গে কাকার বাড়িতে গিয়ে বোনকে বারান্দায় পড়ে থাকতে দেখি। এরপর তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।’