• বৃষ্টি উপেক্ষা করে জনপ্লাবনে ভাসবে ২১ জুলাইয়ের সভা, প্রত্যয়ী তৃণমূল
    বর্তমান | ২০ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রবিবার ধর্মতলা ভাসবে জনপ্লাবনে। একুশে জুলাই রাজ্যের সব প্রান্ত মিশবে ধর্মতলায়। ঐতিহাসিক সমাবেশ নিয়ে এই দাবি তৃণমূলের। এর পাশাপাশি ট্রেন বাতিলের নির্দেশ দেওয়ায় রেলের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগও তুলেছে রাজ্যের শাসক দল।


    লোকসভা ভোটের পরপরই তৃণমূলের মেগা কর্মসূচি একুশে জুলাইয়ে শহিদ দিবস অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এই মুহূর্তে প্রস্তুতি একেবারে শেষ পর্যায়। শুক্রবার উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তৃণমূলের কর্মীরা কলকাতামুখী হতে শুরু করে দিয়েছেন। সল্টলেক মেলা প্রাঙ্গণ, ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র, গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম, আলিপুর, হাওড়া ও শিয়ালদহের একাধিক লজ সহ শহরের নানা প্রান্তে কর্মীদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ধর্মতলা ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে মূল মঞ্চ তৈরির কাজ একেবারে শেষের পর্যায়ে। মূল মঞ্চের মাপ ৫২/২৮ ফুট। এছাড়াও আরও দু’টি মঞ্চ রয়েছে মূল মঞ্চ লাগোয়া। তার মধ্যে একটি মঞ্চ ৪৮/২৪ ফুট। অন্যটি ২০/২৪ ফুট। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে স্থানে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখবেন, পোডিয়াম রাখা সেই অংশটি বেশ খানিকটা প্রসারিত। এদিন ধর্মতলা প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন কলকাতার পুলিস কমিশনার বিনীত গোয়েল। বিদেশ সফর সেরে এদিন কলকাতায় ফিরেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি নিয়ে দলীয়স্তরে তিনি সবিস্তারে খোঁজখবর নেন।


    রবিবার বৃষ্টি হলেও তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সে দিকে বাড়তি নজর দেওয়া হয়েছে। মূলত বৈদ্যুতিক তার ও সরঞ্জামগুলির জন্য নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। তবে তৃণমূল নেতৃত্ব বলছে, বৃষ্টি যতই হোক একুশে জুলাই ধর্মতলায় কর্মীরা আসবেনই। এই দিনটি কর্মীদের কাছে আবেগের। এদিন থেকেই নেত্রীর নির্দেশে আগামীর লড়াইয়ের বার্তা নিয়ে যাবেন কর্মীরা।


    তবে তৃণমূল কর্মীদের আসার ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে ট্রেন বাতিল সংক্রান্ত নির্দেশ। এদিন রেলের তরফে লিখিত বিবৃতি জারি করে বলা হয়, শনিবার ও রবিবার ৩২টি লোকাল ট্রেন বাতিল হচ্ছে ব্যান্ডেল-নৈহাটি শাখায়। জরুরি মেরামতির জন্য এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু হঠাৎ করে কেন রেল বাতিলের সিদ্ধান্ত, তা ঘিরে জটিলতা তৈরি হয়। রেল কর্তৃপক্ষকে চড়া সুরে আক্রমণ করেন তৃণমূল নেতারা। এর আগে নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ২১ জুলাই যে বিপুল সংখ্যক মানুষ আসবেন, তাঁরা যাতে ঠিকমতো আসতে পারেন, সেটা দেখা রেলের দায়িত্ব। তারা রেলের বগির সংখ্যা বাড়িয়ে মানুষের আসার ব্যবস্থা করুক। এদিন রেলের ওই ঘোষণার পর তৃণমূলের তরফে প্রবল চাপ আসতে থাকায় ওই নির্দেশ তুলে নেওয়া হয়। তবে তা করা হয়েছে মৌখিকভাবে। আর অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে সেই নির্দেশ ডিলিট করা হয়েছে। অভিযোগ, শিয়ালদহ ডিভিশনের মতামত না নিয়ে পূর্ব রেল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ২১ জুলাই লাখো লাখো মানুষ ধর্মতলায় আসবেন। ফলে জেনে বুঝেই রেলের এই নির্দেশকা বলে তৃণমূলের দাবি। এর মধ্যে ‘চক্রান্ত’ থাকতে পারে মনে করেন রেলের এক কর্তাও। এছাড়াও শিয়ালদহ স্টেশনের বাইরে প্রতি বছর তৃণমূলের তরফে বড় একটি মঞ্চ করা হয়। সেটিরও এবার অনুমতি দেওয়া হয়নি। পরে তৃণমূলের চাপে অন্য জায়গায় ছোট মঞ্চ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেছেন, তৃণমূলের প্রতি রেলের অসহযোগিতা নতুন নয়। এর আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দিল্লি যাত্রাতেও ট্রেন বাতিল করেছিল রেল কর্তৃপক্ষ। তৃণমূল বাংলায় ভালো ফল করছে বলেই কী রেলের এত গোঁসা।
  • Link to this news (বর্তমান)