নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: অবশেষে চারদিন পর পুলিসের জালে সোনারপুরের জেসিবি জামাল সর্দার। শুক্রবার রাতে কলকাতার লেদার কমপ্লেক্স ও নরেন্দ্রপুর থানার বর্ডার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। আজ তাকে বারুইপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হবে। সালিশি সভা ডেকে মহিলাকে মারধর করার ঘটনা সামনে আসার পর ১৫ জুলাই থেকে বেপাত্তা হয়ে যায় প্রতাপনগরের এই জমি হাঙর। তার খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরছিল পুলিস।
এদিকে, যত দিন যাচ্ছে জামালউদ্দিন সর্দারের কীর্তির কথা ঘুরছে মুখে মুখে। তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন ছোট ভাই কামাল সর্দার। তাঁর দাবি, ২০২০ সালে একটি মামলায় নাম জড়িয়েছিল গ্রামের বেশ কয়েক জনের। জামাল তাঁদের মামলা লড়ার ব্যবস্থা করে দেবে বলে প্রচুর টাকা নিয়েছিল। কিন্তু সে কিছু করেনি বলে অভিযোগ। উল্টে পুরো টাকা আত্মসাৎ করেছিল। কামালের দাবি, দাদার এই প্রতারণার প্রতিবাদ করেছিল সে। তার ফলও হয়েছিল ভয়াবহ। কামালের কথায়, ‘ওই ঘটনার দু’দিন পরই জামাল তার তৃতীয় স্ত্রীকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করে থানায়। পুলিস আমায় গ্রেপ্তার করে। ২৭ দিন জেল খেটেছি।’ সেই ঘটনার পর থেকেই জামালের প্রতি চরম ক্ষোভ তৈরি হয় কামালের মনে। দু’জনের মধ্যে দূরত্ব বাড়ে। দিন কয়েক ধরে জামালের নাম বিভিন্ন অপরাধে প্রকাশ্যে আসতেই সরব হয়েছেন কামাল। তাঁর কথায়, ওকে দাদা বলতেও ঘৃণা করে। ওর কড়া শাস্তি হোক।
জামালের বাড়ির পিছন দিকে একটি দরজা রয়েছে। গ্রামবাসীরা মনে করছেন, জামাল সামনের গেট দিয়ে বেরিয়ে পালিয়ে যাওয়ার আগে তার স্ত্রী ও সন্তানদের পিছনের দরজা দিয়ে বের করে দিয়েছিল। কারণ সেই দরজাটি ভিতর থেকে বন্ধ। জামালের বাড়িতে মার্বেল ও টাইলসে মোড়া ‘বিচারলয়’ নেশা ছাড়ানোর কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহার করা হতো বলে গ্রামবাসীদের একাংশ জানান। তাঁরা বলছেন, অনেকেই স্বামী বা ছেলের মদ, গাঁজা ছাড়ানোর জন্য জামালের বাড়ি নিয়ে আসতেন। নীতি পুলিসের মতো জামাল সেখানে থাকা শিকল দিয়ে ওই ব্যক্তিদের বেঁধে রাখতেন। কখনও কখনও তাঁদের মারধর করা হতো বলেও অভিযোগ। এভাবেই দিনের পর দিন বেড়েছে জামালের মাতব্বরি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর মিলবে মনে মনে করছে পুলিস।