নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: নিট-পিজি ‘কেলেঙ্কারি’ নিয়ে তদন্তে নামল রাজ্য পুলিস। তারা জানতে পেরেছে, প্রতারক চক্র পূর্ব বর্ধমানের চারজন চিকিৎসককে ফোন করে নম্বর বাড়ানোর টোপ দিয়েছিল। অন্য জেলার চিকিৎসকদেরও তারা ফোন করেছে। সে ব্যাপারেও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। চক্রের পর্দা ফাঁস করতে চিকিৎসক সংগঠনও উঠেপড়ে লেগেছে।
এক পুলিস আধিকারিক বলেন, একজন চিকিৎসক মেমারি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। বাকিদের সঙ্গে কথা বলে ফোন নম্বর সংগ্রহ করা হবে। প্রতারকরা একাধিক ফোন নম্বর ব্যবহার করেছে। যে কোনও ভাষায় কথা বলার জন্য তারা টেলিকলার নিয়োগ করেছে। প্রার্থী কোন ভাষায় কথা বলতে চান, তা তারা আগে জানতে চাইছে। হিন্দি, ইংরেজি বা আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলার জন্য তাদের আলাদা আলাদা লোক রয়েছে। তারা ওড়িশা, বিহার, বাংলা সহ অন্যান্য রাজ্যের প্রার্থীদেরও টোপ দিতে পারে বলে আধিকারিকরা মনে করছেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের অনুমান, প্রতারকরা বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে রয়েছে। তবে মেমারির চিকিৎসকের কাছে ওড়িশা থেকে ফোন এসেছিল। সেই নম্বর ধরেই তারা চক্রের কাছে পৌঁছতে চাইছে।
তদন্তকারীদের অনুমান, প্রতারকরা ভুয়ো সিমকার্ড ব্যবহার করবে। প্রতারকরা প্রার্থীদের অনলাইনে টাকা জমা দেওয়ার জন্য বলছে। সেই অ্যাকাউন্টও অন্যের নামে খোলা হতে পারে। বর্ধমান দক্ষিণের মহকুমা পুলিস আধিকারিক অভিষেক মণ্ডল বলেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডাক্তার সংগঠনের পক্ষ থেকে কয়েকদিন আগেই ডিজির কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, আমাদের মনে হচ্ছে, প্রতারকদের শিকড় বহু দূর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার না করা গেলে আবার বড়সড় দুর্নীতি হতে পারে। সর্বভারতীয় পরীক্ষা নিয়ে সিবিআই তদন্ত চালাচ্ছে। তারপরও প্রতারকরা এসব করার সাহস পাচ্ছে কীভাবে?
চিকিৎসক সংগঠেনর দাবি, প্রতারকরা প্রার্থীদের ফোন নম্বর কীভাবে পেল, সেটাই ভাবাচ্ছে। তারা শুধু নিট পিজি পরীক্ষার্থীদেরই বেছে বেছে ফোন করছে। অন্য কোনও পেশার লোকজনের কাছে এধরনের ফোন গিয়েছে বলে এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। বড় মাথা না থাকলে এভাবে বেছে বেছে প্রার্থীদের ফোন করত না। ৭০ থেকে ৯০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তারা নম্বর বাড়ানোর টোপ দিচ্ছে। নম্বর বাড়াতে ক্যাটাগরি অনুযায়ী টাকা দাবি করছে।
জেলা পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, যাঁদের কাছে ফোন গিয়েছে তাঁরা সহযোগিতা করলে প্রতারকদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে। কিন্তু অনেকেই অভিযোগ করতে চাইছেন না।