মেন্টরের গল্প শুনেই সুড়ঙ্গ তৈরির ছক মাথায় আসে সাদ্দামের
বর্তমান | ২০ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা ও সংবাদদাতা, বারুইপুর: কুলতলির অপরাধ জগতের বেতাজ বাদশা সাদ্দাম সর্দার ‘মেন্টরের’ কাছ থেকে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড ট্যানেল’-এর কথা শুনেছিল। তার গুরুও চোরাই মাল রাখার জন্য গর্ত খুঁড়ে ট্যানেল বানিয়েছিল। সেখান থেকে সাদ্দামের মাথায় আসে সুড়ঙ্গ তৈরির পরিকল্পনা। এক দিকে আগ্নেয়াস্ত্র লুকিয়ে রাখা ও অন্যদিকে অপহরণ করে কাউকে আটকানোর জন্য এই ট্যানেলকে ব্যবহার করা ছিল সাদ্দামের উদ্দেশ্য। তদন্তে নেমে এই তথ্য হাতে এসেছে বারুইপুর জেলা পুলিসের। তবে সুড়ঙ্গ তৈরির আসল উদ্দেশ্য নিয়ে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করে চলেছে কুখ্যাত এই অপরাধী।
তদন্তে উঠে আসছে ট্যানেল তৈরিতে দক্ষ বেশকিছু রাজমিস্ত্রি রয়েছে মুর্শিদাবাদে। তাঁদের ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে তাঁরা বড়সড় সুড়ঙ্গ তৈরি করতে সক্ষম। তদন্তকারীরা জেনেছেন, সুড়ঙ্গ তৈরির ভাবনা মাথায় আসার পর এই কাজে দক্ষ রাজমিস্ত্রির খোঁজ শুরু করে সাদ্দাম। তার এলাকায় কাজে আসা রাজমিস্ত্রিদের মাধ্যমে একজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই ব্যক্তিকে খালি জমিতে নিয়ে আসে সাদ্দাম। জায়গা ঘুরে দেখে ঠিক হয়, কীভাবে কোন জায়গায় ট্যানেল কাটা হবে। সেইমতো কংক্রিটের সুড়ঙ্গ তৈরি হয়। সূত্রের খবর, এরজন্য কয়েকলক্ষ টাকা খরচ হয়েছিল সাদ্দামের। এই সুড়ঙ্গ নিয়ে সাদ্দামকে জেরা করা হলে প্রথমে সে বলার চেষ্টা করে শৌচাগার বানানোর জন্য এটি তৈরি করেছিল। বেশ কিছু প্রশ্ন করতেই বয়ান বদল করে বলে এখানে মাগুর মাছ চাষ করত সে। বিভিন্ন রকম কথা বলে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার কৌশল নিয়েছে অভিযুক্ত। একইসঙ্গে নিজেকে নির্লিপ্ত রাখার চেষ্টা করে গিয়েছে। আধিকারিকরা বুঝতে পারছেন, সহজে মুখ খোলার লোক নয় সাদ্দাম, তাই তথ্যপ্রমাণ হাতে নিয়ে তাকে চেপে ধরার কৌশল নিচ্ছেন তাঁরা। যাতে ভেঙে পড়ে সুড়ঙ্গ তৈরির কারণ ব্যাখ্যা করে। তাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে ঘটনার পুননির্মাণ করবে পুলিস। একইসঙ্গে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র সে কোথায় লুকিয়ে রেখেছে তারও খোঁজ চলছে।