সংবাদদাতা, কাটোয়া: শুধু লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য তৃণমূল জেতেনি। আমাদের হারের কারণ খুঁজে বের করতে হবে। সংগঠন মজবুত করলে ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটে আমরাই ক্ষমতায় আসব। শুক্রবার সন্ধ্যায় দাঁইহাটে দলীয় কর্মীদের বৈঠকে এই মন্তব্য করেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। তিনি এদিন দলের কর্মীদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। তবে, সেই বৈঠকে বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর নেতারা কেউ ছিলেন না। মূলত আদি বিজেপির নেতা কর্মীরাই উপস্থিত ছিলেন।
এদিন দিলীপবাবু গুসকরা শহরে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির পর দাঁইহাটে আসেন। সেখানে একটি গোডাউনে দলের পুরনো কর্মীদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ বৈঠক করেন। দলীয় কর্মীদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, তৃণমূলের আগে একজন সাংসদ ছিল। সেখান থেকে তাদের এখন সাংসদ সংখ্যা বেড়েছে। তৃণমূল শুধুই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য জয়ী হয়নি। মহিলা ও নতুন ভোটাররা আমাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে কি না, তা আপনাদের জানতে হবে। তারজন্য বাড়ি বাড়ি ঘুরতে হবে। একটা সময় ছিল যখন সাংগঠনিক কাটোয়া জেলায় আমাদের একটা পঞ্চায়েত ছিল। এখন পূর্বস্থলীর তিনটে পঞ্চায়েত আমাদের দখলে এসেছে। তাই আপনাদের বলছি, সামনে বিধানসভা নির্বাচনের জন্য এখন থেকেই ময়দানে ঝাঁপাতে হবে।
এদিন দিলীপবাবুর বৈঠকে বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীকে দেখা যায়নি। সাংগঠনিক জেলা সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর সঙ্গীরা বৈঠকে ছিলেন না। মূলত কাটোয়া সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ ও তাঁর অনুগামীরা উপস্থিত ছিলেন। ফলে দলের গোষ্ঠী কোন্দল কমার কোনও লক্ষণ নেই। এদিনের বৈঠক নিয়ে দিলীপবাবু অবশ্য সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলেননি। দিলীপবাবুর বৈঠকে যোগ দেওয়া অনেক বিজেপি কর্মী বলেন, আমাদের মতো পুরনো কর্মীদের দল এখন গুরুত্ব দেয় না। লোকসভা ভোটে আমাদের একপ্রকার বসিয়ে রাখা হয়েছিল। কিন্তু দিলীপবাবু আমাদের মনে রেখেছেন। আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। খুব ভালো লাগছে। উনি যদি ফের বড় কোনও দায়িত্ব পান তাহলে দল চাঙ্গা হবে। কাটোয়া সংগঠনিক জেলা সভাপতি গোপালবাবু বলেন, দিলীপ ঘোষ আমাদের দলের পুরনো নেতা। তিনি এখন দলের কোনও পদে নেই। তাই তিনি তাঁর পুরনো ‘বন্ধু’দের সঙ্গে দেখা করতে আসতেই পারেন। তবে, দলীয় প্রোটোকল মেনে আমাদের জানিয়ে এলে খুব ভালো হতো।
এদিন দিলীপবাবু একটি পুরনো মামলায় জামিন নিতে বর্ধমান সিজেএম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। বিচারক তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন। আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে দিলীপবাবু বলেন, লোকসভা ভোটের দিন কপিবাগান এলাকার একটি বুথে গেলে আমাদের উপর হামলা চালানো হয়। আমাদের কর্মীদের মারধর করা হয়। আমার নিরাপত্তারক্ষীরাও আক্রান্ত হন। উল্টে আমাদের নামেই মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। সেই মামলায় এদিন জামিন নিলাম।