নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: চব্বিশের লোকসভা ভোটে বাংলায় বিপর্যস্ত বিজেপি। এবার বারাসতে বিজেপির এক মণ্ডল সভাপতির বিরুদ্ধে আর্থিক ‘নয়ছয়’-এর অভিযোগ ভাইরাল হয়েছে। সব মিলিয়ে আর্থিক তছরুপের পরিমাণ হবে প্রায় ২ কোটি টাকা হবে। বিজেপি নেতারা অবশ্য এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তৃণমূল নেতৃত্ব চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেছে বিজেপিকে।
ভোট পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিজেপির বিতর্কে কিছুতেই ইতি পড়ছে না। নেতাদের ‘আলটপকা’ ও বিতর্কিত মন্তব্য বারে বারে বিড়ম্বনায় ফেলেছে দলকে। এবার এই তালিকায় নয়া সংযোজন অশোকনগরে বিজেপির এক মণ্ডল সভাপতির দুর্নীতি। বিজেপির একটি ‘অফিসিয়াল’ পেজে অশোকনগর-১ বিজেপির মণ্ডল সভাপতির বিরুদ্ধে আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগ ফাঁস করা হয়েছে। মণ্ডল সভাপতির বিরুদ্ধে দফায় দফায় টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে (যদিও ওই পোস্টের সত্যতা যাচাই করেনি বর্তমান)। তাতে লেখা, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে অশোকনগর মণ্ডল ১-এর সভাপতি উৎপল কর্মকার ও তাঁর কমিটি বিজেপির সাধারণ কর্মীদের সঙ্গে বেইমানি করেছেন। তিনি মোদির দু’টি জনসভায় গাড়ি করে লোক পাঠিয়েছিলেন। একটি হয়েছিল বারাসতে, অন্যটি অশোকনগরে। তিনি প্রতিটিতেই বড়জোর ৩০টি করে গাড়ি পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু জেলা সভাপতিকে তিনি নাকি ৬০টি করে গাড়ির হিসেব দেখিয়েছেন। গাড়ি পিছু তিনি পেয়েছেন সাত হাজার টাকা। অর্থাৎ মোট ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। কিন্তু হিসেবে দেখানো হয়েছে ৮ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। গুমায় যে সভা হয়েছিল, তার বিরিয়ানি খরচ, মঞ্চ, হেলিপ্যাড মিলে ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা লেগেছিল। কিন্তু উৎপলবাবু নাকি মোট পেয়েছিলেন ৪ লক্ষ ২১ হাজার টাকা। ৭৪টি বুথের মধ্যে ৪৪টিতে টাকা দেওয়া হয়েছে। টাকা পায়নি ৩০টি বুথ। ৪৪টি বুথের মধ্যে কেউ পেয়েছেন ২০০০, কেউ ৫০০০, আবার কেউ পেয়েছেন ৭০০০ টাকা। বাকি টাকার হিসেব নেই! সবমিলিয়ে প্রায় সাত থেকে আট লক্ষ টাকা নয়ছয় হয়েছে।
এ নিয়ে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি উৎপল কর্মকার বলেন, যে পোস্ট করেছে তাঁকে ফোন করেছি। তাঁর কাছে জানতে চেয়েছি, এই হিসেব তিনি কীভাবে পেলেন? এর কোনও ভিত্তি নেই। অন্যদিকে বারাসত সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি তরুণকান্তি ঘোষ বলেন, সমস্ত তথ্য মিথ্যা। কে বা কারা এই পোস্ট করেছে জানি না। এর উত্তর দেওয়া মানে সময় নষ্ট করা। এনিয়ে অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী বলেন, আসলে বিজেপি যে চোরদের দল, তা বিজেপি নেতাদের কথায় স্পষ্ট। যে তথ্য সামনে এসেছে, তার থেকেও বেশি টাকা নয়ছয় বলে আমাদের ধারণা। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক বিজেপির এক নেতার কথায়, এই হিসেবটা কেবল একটা মণ্ডলের। বারাসত সাংগঠনিক জেলায় মোট ২৯টি মণ্ডল রয়েছে। সেক্ষেত্রে মোট হিসেব করলে নয়ছয়ের পরিমাণ প্রায় ২ কোটি টাকা হবে। এর দলীয় তদন্ত প্রয়োজন।