অজানা সংক্রমণে আক্রান্ত আরও ২ প্রসূতি, ভর্তি করা হল পিজিতে
বর্তমান | ২০ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: চুঁচুড়া হাসপাতালে সিজার হওয়া প্রসূতিদের অজানা সংক্রমণ নিয়ে শুক্রবার রাত পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত আসতে পারেননি চিকিৎসকরা। সংক্রামিত পাঁচজন প্রসূতির মধ্যে একজন মারা গিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে আজ, শনিবার স্বাস্থ্যভবনের বিশেষজ্ঞ দল চুঁচুড়ায় আসতে পারে, এমনই ইঙ্গিত মিলছে। এদিকে, বৃহস্পতিবার রাতে আরও দু’জন প্রসূতিকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। চুঁচুড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, অজানা সংক্রমণে আক্রান্ত একজন প্রসূতি বর্তমানে চুঁচুড়া হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তিনি আগের থেকে সুস্থ।
শুক্রবার স্থানীয় স্বাস্থ্য প্রশাসন ওই অজানা সংক্রমণ নিয়ে আরও একবার তত্ত্বতলাশ করেছেন। যদিও নিশ্চিত কোনও উত্তর মেলেনি। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, অ্যানাস্থেশিয়া অর্থাৎ অজ্ঞান করার ওষুধ প্রয়োগে ত্রুটি, ইন্ট্রা-অ্যাবডোমিনাল প্রেশার বেড়ে যাওয়া, মূত্রথলি থেকে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের মতো ঘটনা সাধারণত কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে মৃত ও জীবিত প্রসূতিদের ক্ষেত্রে এই সংক্রমণ দেখা গিয়েছে। তাঁদের ডায়ালিসিস করাতে হয়েছে। ফলে ওই তিনটি ঘটনার মধ্যে কিছু ঘটেছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রসঙ্গত, পাঁচ প্রসূতিকে একই ওটিতে একই চিকিৎসক একইদিনে সিজার করেছিলেন। শুক্রবার অবশ্য হাসপাতাল, ওষুধ, চিকিৎসক, অপারেশন থিয়েটারের ত্রুটি, সমস্ত অভিযোগই স্বাস্থ্য প্রশাসন উড়িয়ে দিয়েছে। হুগলির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ মৃগাঙ্কমৌলি কর বলেন, চিকিৎসকের কোনও গাফিলতি নেই। ওষুধ ও অপারেশন থিয়েটারের কোনও সমস্যাও আমরা খুঁজে পাইনি। সেগুলি রীতিমতো নিরাপদ এবং অন্যান্য আরও প্রসূতির ক্ষেত্রে সেসব ব্যবহার করা হয়েছে। তবে সংক্রমণ একটা হয়েছে, একথা ঠিক এবং তার কারণ আমরা এখনও জানি না। এ বিষয়ে আমরা বিশেষজ্ঞ কমিটির সাহায্য চেয়েছি। তাঁরা দ্রুত আসবেন। অসুস্থ এক প্রসূতির দেওর শাহিদ শেখ বলেন, হাসপাতালেই কোনও ত্রুটি হয়েছে। না হলে একই চিকিৎসকের অধীনে থাকা প্রসূতিদেরই কেন সমস্যা হবে? ইতিমধ্যেই একজন মারা গিয়েছেন। আমরা আতঙ্কে আছি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রসূতিদের সন্তানদের শরীরে কোনও সংক্রমণ ছড়ায়নি। তারা সকলেই এসএনসিইউতে সুস্থ আছে।
গত সোমবার চুঁচুড়ার ইমামবাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পাঁচ প্রসূতির সিজার করা হয়। রাত থেকে পাঁচজনই অজানা সংক্রমণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের দু’জনকে বুধবার কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দু’জনেরই কিডনি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তারপর বৃহস্পতিবার একজন মারা যাওয়ায় এই অজানা সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মধ্যেও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে চারদিনেও সংক্রমণের কারণ এবং কিডনি কেন আক্রান্ত হচ্ছে, তার হদিশ পাওয়া যায়নি। যা আতঙ্ক আরও বাড়িয়েছে। পাশাপাশি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ত্রুটি এড়াতে চাইলেও বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য অন্য ইঙ্গিত দিচ্ছে।