• মদ খাওয়ার টাকা না পেয়ে কৃষ্ণনগরে ব্যবসায়ীকে গুলি
    বর্তমান | ২০ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: মদ খেতে টাকা না দেওয়ায় মাছ ব্যবসায়ীকে গুলি করল মদ্যপ দুষ্কৃতীরা। আক্রান্ত যুবকের নাম বিশ্বনাথ ঘোষ। শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কৃষ্ণনগরের গোয়াড়িবাজারে। আক্রান্তের বাড়ি নগেন্দ্রনগর। বর্তমানে তিনি শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পায়ে গুলি লাগার পাশাপাশি মাথাতেও গুরুতর আঘাত পেয়েছেন ব্যবসায়ী। তবে অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। সিসি ক্যামেরায় উঠে এসেছে গুলি চালানোর দৃশ্য। দেখা যাচ্ছে, ধাওয়া করে ব্যবসায়ীকে গুলি করা হচ্ছে। জখম ব্যক্তির পরিবারের তরফ থেকে কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। একই সঙ্গে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। কারণ, গুলি চালাতে যাঁদের দেখা গিয়েছে, তাঁরা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ছত্রছায়ায় থাকত বলে বিরোধীরা অভিযোগ জানিয়েছে। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। কোতোয়ালি থানার এক আধিকারিক বলেন, মূল অভিযুক্তরা পলাতক। তাদের এক সঙ্গীকে আটক করা হয়েছে।  


    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বনাথ ঘোষ পাত্র বাজারে মাছের ব্যবসা করেন। প্রতিদিন সকালে গোয়াড়িবাজারে আড়ৎ থেকে মাছ নিয়ে আসেন। শুক্রবারও বিশ্বনাথ মাছ আনতে গোয়াড়িবাজার যাচ্ছিলেন। সেই সময় স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতী তাঁকে ঘিরে ধরে। সিসি ক্যামেরায় তাদের মধ্যে দু’জনকে দেখা গিয়েছে। একজনের কাছে বন্দুক ছিল। তা দিয়ে গুলি চালানোর পাশাপাশি বিশ্বনাথের মাথায় আঘাত করতেও দেখা গিয়েছে। শহরের রাস্তায় প্রকাশ্যে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সকাল থেকেই গোয়াড়িবাজার ছিল থমথমে। সেখানে বিশাল পুলিস বাহিনী মোতায়েন করা হয়। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুষ্কৃতীরা স্থানীয় একটি ক্লাবে ভোর পর্যন্ত মদ খাচ্ছিল। সকালে তারা মদ্যপ অবস্থায় মাছ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মদ কেনার টাকা চায়। কিন্তু বিশ্বনাথ‌ সেই টাকা দিতে অস্বীকার করেন। তখনই তাঁর উপর বন্দুক হাতে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। মাটিতে ফেলে মারধর করা হয়। বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিও ছোড়া হয়। একটি গুলি লাগে ব্যবসায়ীর পায়ে। সেই সুযোগে দুষ্কৃতীরা ৬০ হাজার টাকা ও মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। 


    জখম ব্যক্তির ভাই সমীর ঘোষ বলেন, প্রথমে ওরা দু’রাউন্ড গুলি চালিয়েছিল। তৃতীয় গুলি দাদার পায়ে লেগেছে। ভোর পাঁচটা নাগাদ গোয়াড়িবাজারে দাদা মাছের আড়তে যাচ্ছিল। তখন মালোপাড়ার মোড়ের কাছে সৈকত হালদার, টুবাই হালদার, সাগর হালদার আমার দাদাকে ঘিরে ধরে। ওরা তোলা চাইছিল আমার দাদার কাছ থেকে। কিন্তু দাদা তা দেয়নি। যার জন্য গুলি চালিয়েছে। 


    বিজেপি নেতা সন্দীপ মজুমদার বলেন, তৃণমূলের ছত্রছায়ায় কৃষ্ণনগরে দুষ্কৃতীরাজ শুরু হয়েছে। এই ঘটনাই তার উদাহরণ। অভিযুক্তরা সকলেই তৃণমূলের আশ্রিত দুষ্কৃতী। যদিও কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের সভাপতি সম্রাট পাল বলেন, অভিযুক্তদের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। এটা নিয়ে অহেতুক রাজনীতি করা হচ্ছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)