এই সময়, শান্তিনিকেতন: শান্ত হোক সোনার বাংলা। বাড়ি ছেড়ে বিশ্বভারতী ও রবীন্দ্রভারতীতে পড়তে আসা বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদেজনদের এখন একটাই প্রার্থনা। তাঁরা চাইছেন, আলোচনার মাধ্যমে শান্তি ফিরুক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে রক্তপাত বন্ধের কাতর আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।সে দেশে নেট সংযোগ বন্ধ থাকায় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না বাংলাদেশি পড়ুয়ারা। প্রতি মুহূর্তে মোবাইলে স্ক্রিনে নজর রাখছেন, যদি আর কোনও খবর আসে। কখনও সোশ্যাল মিডিয়ায়, আবার কখনও আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে পরিচিতদের মৃত্যু বা গুরুতর জখম হওয়ার খবর পাচ্ছেন তাঁরা।
শান্তিনিকেতনে প্রায় ৪০ হাজার বর্গফুট জায়গা জুড়ে আন্তর্জাতিক গবেষণাক্ষেত্র বিশ্বভারতীর ‘বাংলাদেশ ভবন’ প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এই মুহূর্তে ৫০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি পড়ুয়া বিশ্বভারতীতে পড়াশোনা করেন। তাঁদেরই একজন দীপা সাহা বলেন, ‘দেশের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। মৃত্যুর খবর আসছে৷ দীর্ঘক্ষণ ধরে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না৷ খুব চিন্তায় ও আতঙ্কে আছি।’
আরও দুই বাংলাদেশি ছাত্রী অমৃতা সরকার ও শ্রাবণী সায়ন্তনী বলেন, ‘দেশের পরিস্থিতি কী তা বলার ভাষা নেই! আমরা আর মৃত্যু চাই না৷ যা হচ্ছে, ভয়াবহ। এপার বাংলায় বসে বাড়ির লোকজনের কাছে খবর পাচ্ছিলাম। হঠাৎ ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে সেই খবরটুকুও পাচ্ছি না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্জি, রক্তপাত বন্ধ হোক।’
সহপাঠীদের সঙ্গে একাত্ম বোধ করছেন অন্য পড়ুয়ারাও। কথা ঘোষ বলেন, ‘আমরাও তো ছাত্রছাত্রী, ওদের দাবি-যন্ত্রণা-সমস্যার কথা বুঝি। তাই চাই সোনার বাংলা আবার শান্ত হোক। দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে কাতর প্রার্থনা, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমস্যার সমাধান করুন।’
অন্য দিকে, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিটি রোড ক্যাম্পাসে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীরা এ দিন জমায়েত করেন। অনেকেই জানালেন, নেট বন্ধ থাকায় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। ফোন করলেও কোনও কথা শোনা যাচ্ছে না। সেখানকার বন্ধু-বান্ধবরা আদৌ বেঁচে আছেন কিনা, তা-ও বুঝতে পারছেন না তাঁরা। জমায়েতে ছিলেন ভোক্যাল মিউজ়িকের স্নাতকোত্তর ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র রাসেল রবিন। তাঁর বাড়ি বাংলাদেশের রংপুরে।
রাসেলের কথায়, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মান করি। দেশবিরোধী নই। কিন্তু দেশে যে ভাবে গুলি করে মারা হচ্ছে, আমরা চাই, তা বন্ধ করুন প্রধানমন্ত্রী। তিনি উপযুক্ত ব্যবস্থা নিলে এই অশান্তি থাকবে না।’