খবর যাতে বন্ধ না হয়! বাংলাদেশের সাংবাদিক বসিরহাট সীমান্তে এসে পালন করলেন কর্তব্য, কী ভাবে, দেখুন...
আজকাল | ২১ জুলাই ২০২৪
আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাস্তায় দাপাদাপি সাঁজোয়া গাড়ির। সেনাদের ভারী বুটের শব্দ শোনা যাচ্ছে। রাস্তায় জ্বলতে থাকা ভগ্নাবশেষের ধোঁয়া পাক খেতে খেতে উঠছে আকাশে। সেনা চলে যাওয়ার পর ফের শুনশান হয়ে পড়ছে রাস্তা। টেলিভিশন বা অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমের দৌলতে বুঝতে কারুর বাকি থাকার কথা নয়, এটা বাংলাদেশ। কোটা আন্দোলনের ধাক্কায় যার সর্বাঙ্গ জুড়েই এই মুহূর্তে দগদগে ক্ষত। খেলার ধারাবিবরণীর মতো যা মুহূর্তে মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ছিল এক্স হ্যান্ডেল বা সাবেক টুইটারের মাধ্যমে।
কিন্তু অশান্তি যাতে না ছড়ায় সেজন্য বাংলাদেশ সরকার আপাতত বন্ধ রেখেছে দেশে ইন্টারনেট পরিষেবা। যার প্রভাবে যে জায়গাগুলি ধাক্কা খেয়েছে তার অন্যতম হল সংবাদ মাধ্যম। হাতে গরম বা টাটকা খবর পরিবেশন করার উপায় থাকছে না। তাই সংবাদ পরিবেশনের জন্য কেউ কেউ উত্তর ২৪ পরগণার ঘোজাডাঙা সীমান্তে চলে আসছেন। কারণ, এখানে ইন্টারনেট পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে। জায়গাটা তাঁদের বাড়ি থেকে অনেক দূরে। কিন্তু পেশার স্বার্থে এই অসুবিধা বা 'প্রফেশনাল হ্যাজার্ড'টা তাঁরা মেনে নিয়েছেন। জানাচ্ছেন তাঁদের দেশে কীভাবে জমছে লাশের পাহাড়!
শনিবার ঘোজাডাঙা সীমান্তে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের সাংবাদিক মুস্তাফিজুর রহমান জানান, গত তিনদিন ধরে তাঁদের দেশের ইন্টারনেটের সার্বিক পরিষেবা বন্ধ। অভিভাবকরা দুশ্চিন্তায় আছেন। কারণ, যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। তিনি নিজেই তাঁর দেশের সংবাদ পরিবেশন করতে ভারত সীমান্তে এসেছেন বলে জানান। প্রয়োজনে তাঁকে আবার আসতে হবে বলেও মুস্তাফিজুর জানিয়েছেন।
একদিকে যেমন সংবাদ মাধ্যমের কর্মীরা অসুবিধায় পড়েছেন তেমনি সমস্যায় পড়েছেন দু'দেশের ব্যবসায়ীরা। ঘোজাডাঙা সীমান্তে ভারতের দিকে দাঁড়িয়ে রয়েছে সারি সারি পণ্যবোঝাই ট্রাক। যার মধ্যে রয়েছে পেঁয়াজ, লঙ্কা, রসুন, আদা, বিভিন্ন ফল-সহ অন্যান্য শাকসব্জি। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও এই ট্রাকগুলি এসেছে দেশের অন্যান্য রাজ্য থেকে।
সময় যতই গড়াচ্ছে ততই বাড়ছে এই শাকসব্জি ও ফলের পচন ধরার আশঙ্কা। বসিরহাট ঘোজাডাঙা সীমান্তের আমদানি ও রপ্তানি সংস্থাগুলির সম্পাদক সঞ্জীব মণ্ডল বলেন, 'বাংলাদেশের গোলমালের জেরে আমাদের কোনও পণ্যবাহী গাড়ি যেতে পারছে না। সমস্যায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।'
সময় গড়াচ্ছে। বাংলাদেশের রাস্তায় রাস্তায় ছুটছে সেনার গাড়ি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক। দ্রুত ফিরে আসুক শান্তি। হ্যাঁ, এটাই প্রার্থনা, ভারত-বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের।