সংবাদদাতা, কালনা: দুর্গাপুজোর আর তিন মাসও বাকি নেই। শারদ উৎসবের বাজার ধরতে আগেভাগেই গুণগত মান ঠিক রেখে ভালো ডিজাইনের শাড়ি কিনতে সরাসরি আসরে নামল তন্তুজ। শনিবার কালনার ধাত্রীগ্রাম তাঁত কাপড়ের হাটে তাঁতশিল্পীদের কাছ থেকে শাড়ি কিনল তন্তুজ। এদিন ৭৩জন তাঁতশিল্পীর কাছ থেকে ২৪৫৬টি শাড়ি কেনে তন্তুজ। যার দাম সাড়ে ১৯লক্ষ টাকা। উপস্থিত ছিলেন তন্তুজের স্পেশাল অফিসার তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, চিফ মার্কেটিং অফিসার সৃঞ্জনী মুখোপাধ্যায়, জুনিয়র মার্কেটিং অফিসার অরূপ অধিকারী প্রমুখ। লোকসানে চলা তন্তুজ গত কয়েক বছরে লাভের মুখ দেখছে। আর তা সম্ভব হয়েছে দক্ষ পরিচালনা ও ভালো ডিজাইন-গুণমানের শাড়ির বেচাকেনাতে। হস্তচালিত তাঁতের বাজার মন্দা। হস্তচালিত তাঁতের বাজার দখল করেছে আধুনিক যন্ত্রচালিত তাঁত। সরকার তাঁতশিল্পীদের ক্লাস্টারের মাধ্যমে আধুনিক প্রশিক্ষণ, সুতোর ব্যাঙ্ক, তাঁতঘর সহ তাঁত ও তাঁতের সরঞ্জাম বিলি করেছে। কালনা মহকুমার ধাত্রীগ্রাম ও শ্রীরামপুরে সরকারি উদ্যোগে তাঁতের হাট গড়ে উঠেছে। কয়েক বছর ধরে সরাসরি তাঁতশিল্পীদের কাছ থেকে উৎপাদিত শাড়ি কিনে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে তন্তুজ আসরে নামে। বিভিন্ন তাঁত অধ্যুষিত এলাকায় ক্যাম্প করে সরাসরি লক্ষ লক্ষ টাকার শাড়ি কেনা হয়। সরাসরি শাড়ি বিক্রি করে উপকৃত হচ্ছেন তাঁতশিল্পীরা। শনিবার ধাত্রীগ্রাম তাঁত কাপড়ের হাটে এলাকার বাসিন্দা নীলকুমার বসাক ২৫টি শাড়ি বিক্রি করেন। তিনি ২৬হাজার টাকা পেয়েছেন। তিনি স্বীকার করেন, শাড়ির চাহিদা আগের তুলনায় অনেকটা কম। লাভের অঙ্ক কমেছে।
আর এক তাঁতশিল্পী উৎপল বসাক ১৮ হাজার টাকায় ২০টি শাড়ি বিক্রি করেছেন। মন্ত্রী বলেন, তাঁতশিল্পীদের কথা ভেবে সরাসরি শাড়ি কিনছে তন্তুজ। তবে একসময় দেখা গেছে তন্তুজ শাড়ি কিনলেও তা বিক্রিতে সমস্যা হতো। কারণ কেনার সময় গুণগত মান যাচাই হতো না। এখন মানের সঙ্গে কোনও আপস করা হচ্ছে না। ভালো শাড়ি দিন, ভালো দাম পান। শাড়ির সুতো, সঠিক মাপ দেখে ডিজাইন পছন্দ হলেই মার্কেটিং অফিসারদের যাচাইয়ের পর শাড়ি কেনা হচ্ছে। গতবছর আমরা ধাত্রীগ্রাম হাটে ২৫লক্ষ টাকার শাড়ি কেনার লক্ষ্যমাত্রা রাখলেও তাঁতিরা শাড়ি দিতে পারেননি।
এবার গতবারের তুলনায় তাঁদের অংশগ্রহণ অনেকটাই বেশি। ধাত্রীগ্রাম তাঁত কাপড়ের হাট চত্বরে একটি ওয়ারহাউস তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এছাড়াও এই চত্বরে সাড়ে তিন হাজার তাঁতশিল্পীর জন্য মেগা ক্লাস্টার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ভেষজ রঙের গাছের বৃক্ষ উদ্যান গড়ে তোলা হবে। আগামী দিনে রাজ্যের অন্যান্য জায়গার তাঁতশিল্পীদের কাছ থেকেও তন্তুজ সরাসরি শাড়ি কেনার প্রক্রিয়া জারি রাখবে। এবার পুজোয় রাজ্যের ৭৪টি তন্তুজ শোরুমে বাংলার তাঁতশিল্পীদের হাতে তৈরি অভাবনীয় শাড়ির কালেকশন মিলবে।