কৃষ্ণনগরে বাড়ির কাছে যুবকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে রহস্য
বর্তমান | ২১ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: শনিবার সকালে কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত দোগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুনগ্রাম এলাকার এক যুবকের রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হল। যুবকের বাড়ি থেকে পাঁচশো মিটার দূরে একটি লেবু বাগানে তাঁর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মৃত যুবকের নাম রায়েল মণ্ডল (২৪)। কোতোয়ালি থানার পুলিস এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। রায়েলকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বলে পরিবারের দাবি। পাশাপাশি ওই যুবকের শরীরে আঘাতের একাধিক দাগ রয়েছে। পরিবারের তরফ থেকে কোতোয়ালি থানায় খুনের অভিযোগ করা হয়েছে। যদিও যুবকের খুনের কারণ ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। কারণ কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তা পরিবারের লোকজনও বুঝতে পারছেন না।
কোতোয়ালি থানার এক আধিকারিক বলেন, এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। শরীরে আঘাতের দাগ রয়েছে। আমরা সমস্ত দিক তদন্ত করে দেখছি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রায়েলের বছর দেড়েকের সন্তান ও স্ত্রী রয়েছে। মা-বাবা ও দিদির সঙ্গেই তিনি
পরিবার নিয়ে থাকতেন। পরিবারের আর্থিক অবস্থাও ভালো নয়। যুবক নিজে সেরকম কোনও কাজকর্ম করতেন না। সংসার টানতেন তাঁর বাবা। সম্প্রতি কয়েক
সপ্তাহ আগে রায়েল মণ্ডল বেঙ্গালুরুতে গিয়েছিলেন কাজের জন্য। সেখান থেকেই বাড়ির জন্য টাকা পাঠাতেন
তিনি। চারদিন আগেই তাঁর দিদি শারীরিক অসুস্থতার কারণে মারা যান। দিদির মৃত্যু সংবাদ শুনেই তিনি বাড়ি চলে আসেন।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত ন’টা
নাগাদ বেশ কয়েকজন বন্ধুর ফোন আসে তাঁর কাছে। তারপর তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় যাচ্ছেন বলে রায়েল বাড়িতে জানান।
সেইমতো বাড়ির লোকও আর বিশেষ মাথা ঘামাননি। কারণ প্রতিদিনই তিনি আড্ডায় যান। তারপর অনেক রাতে
বাড়ির লোকজন রায়েলকে ফোন করেন। কিন্তু তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে বাড়ির লোকজন তাঁকে খুঁজতে বেরন। বেশ কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরে একটি লেবু বাগানে ঝোপের মধ্যে যুবকের রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখতে পান বাড়ির লোকজন।
রায়েলের মাসির ছেলে নাওয়াজ শেখ বলেন, প্রতিদিনই আড্ডা দিতে সন্ধ্যেবেলা বেরিয়ে যেত। মাঝেমধ্যেই রাতে বন্ধুর বাড়িতে থাকত। সকালবেলা ফিরে আসত। শুক্রবার রাতেও বন্ধুদের ফোন পাওয়ার পর ও বেরিয়ে যায়। তাই বাড়ির লোকজনও বিষয়টা গুরুত্ব দেয়নি। কিন্তু একাধিকবার ফোন করলেও সে ফোন তোলে না। তাতেই সন্দেহ হয়। শনিবার সকালে আমরা ওকে খুঁজতে বেরই। লেবু বাগানে ওর মৃতদেহ পাওয়া যায়। গলায় ফাঁস দিয়ে ওকে খুন করা হয়েছে। সারা শরীরে আঘাতের দাগ রয়েছে।