দাবি মতো টাকা না দেওয়ায় নন্দীগ্রামে ফেরি পারাপার বন্ধ
বর্তমান | ২১ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: দাবিমতো টাকা না পেয়ে হলদি নদীতে ফেরি সার্ভিস বন্ধ করে দিলেন বিজেপি নেতা। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের ভেকুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চমখণ্ড জালপাই গ্রামের ঘটনা। শুক্রবার সকাল ১০টার পর বিজেপির বুথ সভাপতি শুভেন্দু জানা ফেরি সার্ভিস বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ। শনিবারও পঞ্চমখণ্ড জালপাই-হলদিয়ার বালুঘাটা ফেরি সার্ভিস বন্ধ ছিল। সোমবার নন্দীগ্রাম-১ ব্লক প্রশাসন এনিয়ে বৈঠক ডেকেছে। ওই বৈঠকের উপরই আপাতত ফেরি চলাচল নির্ভর করছে।
পঞ্চমখণ্ড-জালপাই থেকে হলদিয়ার বালুঘাটা ফেরিঘাটের লিজ পেয়েছেন প্রভাতচন্দ্র মাঝি। জেলা পরিষদ থেকে তিনি পরপর দু’বার ইজারা পেয়েছেন। ফেরিঘাটে নৌকা চালানো শুরু করতেই ভেকুটিয়া পঞ্চায়েতের ৩২নম্বর বুথের বিজেপি সভাপতি শুভেন্দু জানা ওই ইজারাদারের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা দাবি করেন বলে অভিযোগ। টাকা না দেওয়ায় ফেরি চলাচল বন্ধ হয়। সকাল ১০টা পর্যন্ত ফেরি সার্ভিস সচল ছিল। তারপর বিজেপি নেতার বাধায় ফেরি সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ফেরিঘাটের ইজারাদার প্রভাতবাবু নন্দীগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। জানা গিয়েছে, গত দু’বছর ধরে ওই ফেরিঘাটে নৌকা চালান প্রভাতবাবু। জেলা পরিষদের নির্ধারিত ঘাটে পলি জমে যাওয়ায় খানিকটা দূরে রায়ত জমিতে নৌকা নোঙর করা হতো। সেই জমির মালিক বিজেপির বুথ সভাপতি শুভেন্দু। ব্লক প্রশাসনও জানিয়েছে, বর্তমানে রায়ত জমির উপর নৌকা নোঙর করা হতো। কিন্তু, সেজন্য ফেরি সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। নির্দিষ্ট ঘাটে পলি জমে গিয়েছে। সেখানে নৌকায় যাত্রী তোলা ও নামানো যাচ্ছে না। তাই কিছুটা দূরে রায়ত জমির উপর ওই নৌকা নোঙর করা হতো। ইজারাদার প্রভাতবাবু বলেন, পর পর দু’বছর আমি এই ফেরিঘাটের ইজারা পেয়েছি। নৌকা চালানোর জন্য শুভেন্দু জানা আগে আমার থেকে ১১হাজার টাকা নিয়েছেন। এরপর শুক্রবার ফের নৌকা আটকে এক লক্ষ টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে ঘাট বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন। বাধ্য হয়ে আমি নৌকা চালানো বন্ধ করেছি। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। এক লক্ষ ৫৩হাজার টাকা নিয়ে ঘাটের ইজারা পেয়েছি। তারপর আরও এক লক্ষ টাকা দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
অভিযুক্ত বিজেপির বুথ সভাপতি বলেন, টাকা চাওয়ার অভিযোগ মিথ্যা। ২০২২সালের অক্টোবর মাস থেকে আমাদের রায়ত জায়গার উপর নৌকা লাগানো হচ্ছে। প্রথমে ওই ইজারাদার ছ’মাসের জন্য নৌকা নোঙর করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু, এক বছর হতে চলল আমাদের ব্যক্তিগত জমি ব্যবহার করছে। এবিষয়ে আপত্তি করায় ঝামেলার সূত্রপাত। জেলা পরিষদ থেকে ইজারা দেওয়া হয়েছে। তাহলে জেলা পরিষদ কেন যাত্রী পারাপারের জন্য উপযুক্ত ঘাট বানিয়ে দেবে না? নন্দীগ্রাম-১ বিডিও সৌমেন বণিক বলেন, ঘাটের নির্দিষ্ট জায়গা থেকে খানিকটা দূরে নৌকা লাগানো হতো। সেটি রায়ত জায়গা। সেই জায়গায় মালিক নৌকা লাগাতে বাধা দিচ্ছেন। শনিবারও ফেরি সার্ভিস বন্ধ ছিল। বিষয়টি নিয়ে সোমবার মিটিং ডাকা হয়েছে।