• বাইরের রাজ্যে আলু পাঠালে বর্ডারে আটকে পুলিসি হয়রানির অভিযোগ
    বর্তমান | ২১ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: ভিনরাজ্যে আলু পাঠালে বর্ডারে আটকে পুলিস হয়রানি করছে। এমনই অভিযোগ তুলে রাজ্যজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ব্যবসা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিল প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। শনিবার বাঁকুড়ার জয়পুরে আলু ব্যবসায়ী ও হিমঘর মালিক অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ বৈঠক হয়। সেখানেই এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে। এতে রাজ্যের খুচরো বাজারে আলুর জোগানে ঘাটতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায়, সভাপতি জগবন্ধু মণ্ডল ছাড়াও হিমঘর মালিক অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি সুনীল রানা সহ সংগঠনের অন্যান্যরা। 


    সংগঠনের সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের সর্বত্র তাঁদের সদস্যরা হিমঘর থেকে আলু বের করবেন না। ভিন রা঩জ্যে পাঠানো আলুর লরি পুলিস  বিভিন্ন আন্তঃ রাজ্য সীমান্তে আটকে দিচ্ছে এই অভিযোগে কর্মসূচি নিয়েছে সংগঠন।  অসম, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা পাঠানোর পথে আলুর লরি আটকে দেওয়া হলেও পুলিস কোনও সরকারি নির্দেশিকা দেখাতে পারেনি। কোনও কারণ না দেখিয়ে লরি আটকে দেওয়ায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সামনে পড়েছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন আলোচনায় বসতে চাইলে তাঁরা রাজি আছেন বলে লালুবাবু জানিয়েছেন।      


    প্রায় একই কথাই বলেন আলু ব্যবসায়ী সংগঠনের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি বিদ্যুৎ প্রতিহার। তাঁর মতে, ভিনরাজ্যে পাঠানোর সময় আলুবোঝাই গাড়ি আটকে দেওয়া হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আমরা রাজ্য সরকারের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমেই ব্যবসা করতে চাই। কিন্তু, এব্যাপারে প্রশাসনের তরফে কোনওরকম সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই সংগঠনের তরফে অনির্দিষ্টকালের জন্য ব্যবসা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হিমঘর মালিক অ্যাসোসিয়েশনের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি দিলীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ভিনরাজ্যে আলু পাঠানোর সময় পুলিস সীমান্তে তা আটকে দিচ্ছে। বাইরে আলু না গেলে হিমঘর থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ আলু বেরচ্ছে না। এতে আমরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। তাই ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্তকে আমরা সমর্থন করেছি। তবে আমরা চাই এব্যাপারে রাজ্য সরকার সংগঠনের সঙ্গে আলোচনায় বসে একটা স্থির সিদ্ধান্তে আসুক। প্রসঙ্গত, রাজ্যে আলু সহ অন্যান্য সব্জির অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির কারণে মুখ্যমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। এবিষয়ে টাস্ক ফোর্স গঠন করে বাজারে বাজারে হানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাতে অনেকটাই দাম কমেছে। তবে বাইরে আলু পাঠানোর ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি না করলেও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ভিনরাজ্যের বর্ডার সিল করে আলুবোঝাই গাড়ি আটকে দেওয়া হচ্ছে। পুলিস অযথা হয়রান করছে। এখন আলু না পাঠাতে পারলে ব্যবসায়ীদের একাংশ ওই টাকা মার খাওয়ার আশঙ্কা করছেন। সেই কারণে এদিনের বৈঠকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ব্যবসা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে রাজ্যের বাজারে জোগান কমবে। তাতে আবারও দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সাধারণ মানুষ ভুক্তভোগী হবেন।    
  • Link to this news (বর্তমান)