• সই না করে দিল্লি পাড়ি রাজ্যপালের, আটকে মন্ত্রিসভার রদবদল
    বর্তমান | ২১ জুলাই ২০২৪
  • প্রীতেশ বসু, কলকাতা: চার নবনির্বাচিত বিধায়কের শপথগ্রহণ নিয়ে রাজ্য-রাজভবন সংঘাত অব্যাহত। তার মাঝেই মন্ত্রিসভায় রদবদলের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও টালবাহানার অভিযোগ উঠল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে। সূত্রের খবর, মন্ত্রিসভায় প্রস্তাবিত রদবদলের খসড়া ইতিমধ্যে রাজভবনে পাঠিয়েছে নবান্ন। আর রাজ্যপালের সম্মতি চেয়ে চিঠি দেওয়া হয় গত ১৮ জুলাই। কিন্তু সম্মতি দেওয়া বা এবিষয়ে তাঁর কোনও মতামত আছে কি না, সে বিষয়ে কিছু না জানিয়েই ১৯ জুলাই দিল্লি পাড়ি দিয়েছেন রাজ্যপাল। ফলে বিস্তর জটিলতা তৈরি হয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভার রদবদল ঘিরে। এই ফাইলও আটকে রাখায় রাজভবনের উপর বেজায় ক্ষুব্ধ নবান্নের শীর্ষমহল। যার জেরে রাজ্যের সঙ্গে রাজভবনের সম্পর্ক আরও তিক্ত হতে চলেছে বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।


    লোকসভা নির্বাচনে জিতে নৈহাটির বিধায়ক তথা রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক এখন বারাকপুরের সাংসদ। সেচদপ্তরের দায়িত্ব রাজ্যের ক্ষুদ্র সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার কাঁধে দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গের এক মন্ত্রীর দপ্তর রদবদলের বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত। সেক্ষেত্রে দায়িত্ব আরও বাড়তে পারে রাজ্যের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের। দক্ষিণ কলকাতার এক বিধায়ক তথা মন্ত্রীকে কম গুরুত্বপূর্ণ শিল্প পুনর্গঠনের মতো দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বলেও সূত্রের খবর। কিন্তু, কবে মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবিত এই রদবদলে সিলমোহর দেবেন রাজ্যপাল? এর উত্তর নেই রাজ্য প্রশাসনের কাছে। কারণ, শুক্রবার ফের একই বিষয় জানতে চেয়ে রাজভবনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল নবান্নের তরফে। কিন্তু কোনও সদুত্তর মেলেনি। শুধু জানানো হয়েছে রাজ্যপাল ‘আউট অব স্টেশন’। তিনি কবে কলকাতায় ফিরবেন, সে বিষয়েও রাজভবনের তরফে কোনও সঠিক তথ্য দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।


     ফাইল পৌঁছে যাওয়া সত্ত্বেও তাতে সই না করে কেন দিল্লি চলে গেলেন রাজ্যপাল বোস? কেন অধিকাংশ ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত জানাতে এত বেশি সময়ই বা নিচ্ছে রাজভবন? কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে, রাজভবনে নিযুক্ত সংশ্লিষ্ট স্পেশাল সেক্রেটারিকেও গত মঙ্গলবার রিলিজ করে দিয়েছেন রাজ্যপাল। এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘এঁরা এসব কাজ সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। ফলে দ্রুত ফাইল


    ছাড়তে পারতেন। কিন্তু ক্লার্ক নোট তুলে দেওয়ার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ কে করবেন? এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।’ 


    সম্প্রতি রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছিলেন রাজভবনেরই এক মহিলা কর্মী। ওই ঘটনার পর রাজভবনের উপর যথেষ্ট চাপ তৈরি হয়েছে। এই নিয়ে এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে দিয়ে করানো তদন্ত রিপোর্ট শনিবার প্রকাশ্যে এনেছে রাজভবন। তবে অভিযোগকারিণীরই জবানবন্দি না নিয়ে কীভাবে রিপোর্ট তৈরি হল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)