৫ বছরের জন্য রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নির্মাণকারী সংস্থাই
বর্তমান | ২১ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: প্রতিবছর শুধুমাত্র পূর্তদপ্তরের হাত ধরে বাংলায় প্রায় ৩,৫০০ কোটি টাকার রাস্তার কাজ হয়। কিন্তু বছর ঘুরতেই রাস্তার বেহাল দশার কারণে নাজেহাল হতে হয় সাধারণ মানুষকে। এই বিষয়ে সম্প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেই নড়েচড়ে বসে পূর্তদপ্তর। আম জনতার এই দুর্ভোগে ইতি টানতে বড় পদক্ষেপ করল নবান্ন। এবার থেকে পূর্তদপ্তরের তৈরি বেশিরভাগ রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পাঁচবছরের জন্য নিতে হবে নির্মাণকারী সংস্থাকেই। এমনই সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে রাজ্য সরকার।
এতদিন শুধুমাত্র নাবার্ডের দেওয়া টাকায় পূর্তদপ্তরের তৈরি রাস্তার ক্ষেত্রেই পাঁচবছরের জন্য রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিতে হতো নির্মাণকারী সংস্থাকে। এবার থেকে রাজ্যের বরাদ্দ অর্থ থেকে শুরু করে স্পেশাল অ্যাসিস্ট্যান্স ফান্ডের টাকায় তৈরির রাস্তার ক্ষেত্রেও একই নিয়ম চালু করার নবান্ন তোড়জোড় শুরু করেছে বলেই সূত্রের খবর। ফলে এই ক্ষেত্রেও পাঁচবছরের জন্য রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব থাকবে নির্মাণকারী সংস্থার। এটি আগে ছিল মাত্র তিনবছরের জন্য। তবে ‘সারফেসিং ওয়ার্ক’ বা রাস্তার উপর পিচের প্রলেপ রক্ষণাবেক্ষণের নিয়মে কোনও পরিবর্তন আসছে না। এক্ষেত্রে আগের মতোই কাজ শেষের পরে একবছরের জন্যই রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব থাকবে নির্মাণকারী সংস্থার।
গত সপ্তাহের প্রশাসনিক বৈঠকে রাজ্যের একাধিক জায়গায় রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের মুখে পড়েন পূর্তদপ্তরের আধিকারিকরা। কেন নির্দিষ্ট সময়ে রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না? এই প্রশ্ন করেন তিনি। নির্মাণকারী সংস্থাগুলি পাঁচবছরের জন্য রক্ষণাবেক্ষণ করছে না কেন? একথাও জানতে চান তিনি। এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করারও নির্দেশ দেন মমতা। এই প্রেক্ষিতেই ‘সারফেসিং ওয়ার্ক’ ছাড়া এবার থেকে সমস্ত রাস্তার ক্ষেত্রেই পাঁচবছরের জন্য রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টি কার্যকর করার দিকে এগিয়েছে রাজ্য পূর্তদপ্তর।
প্রসঙ্গত, এর আগে পঞ্চায়েত দপ্তরও একই পথে হেঁটে গ্রামীণ এলাকার রাস্তা নির্মাণকারী সংস্থাকেও পাঁচবছরের জন্য রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়ার দিকে এগিয়েছে।
রাজ্যের এক আধিকারিক জানান, রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে এই নয়া নিয়ম চালু হলে বিশেষভাবে উপকৃত হবে সাধারণ মানুষ। তাদের আর বেহাল সড়ক যন্ত্রণার শিকার হতে হবে না। কারণ, শুধু নির্মাণকারী সংস্থাকে দায়িত্ব বাড়িয়ে হাত গুটিয়ে বসে থাকা হবে এমন নয়, রাজ্যজুড়ে কোথায় কোন রাস্তার হাল খারাপ হচ্ছে, তার উপর নজর রাখবেন দপ্তরের আধিকারিকরাও। ফলে রাস্তার মেরামতির কাজ নির্দিষ্ট সময়ে শুরু হচ্ছে কি না, তার উপরেও নজর রাখবেন তাঁরা। সূত্রের খবর, এই সংক্রান্ত ফাইল ইতিমধ্যেই অর্থদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। - ফাইল চিত্র