বাংলাদেশিদের চিকিৎসা করিয়ে ৯ মাসে মেডিক্যালের আয় ১০ লক্ষ
বর্তমান | ২১ জুলাই ২০২৪
বিশ্বজিৎ দাস, কলকাতা: ফেল কড়ি, মাখো তেল! বিদেশিদের প্রতি রাজ্যের নয়া নীতিতে মুদ্রার মধুর ঝনঝনানি শোনা যাচ্ছে রাজ্যের কোষাগারে। এক বছরেরও কম সময়ে শুধু বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা করে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা আয় করল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ।
সরকারের নয়া নীতি অনুযায়ী মেডিক্যাল ভিসা ও পাসপোর্ট নম্বর নথিভুক্ত করে বহু বিদেশির (মূলত বাংলাদেশের রোগীদের) চিকিৎসা করাচ্ছে মেডিক্যাল। ৬ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে বিদেশি রোগীদের আউটডোর-ইনডোর-ডে কেয়ার চিকিৎসা। সপ্তাহখানেক হল এই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অস্থির পরিস্থিতি। কিন্তু তার আগেও মেডিক্যালে এসে চিকিৎসা করিয়ে গিয়েছেন বাংলাদেশি রোগীরা। ৮ জুলাই পর্যন্ত মেডিক্যাল থেকে সরকারিভাবে চিকিৎসা পেয়েছেন ৫৫ জন বাংলাদেশি নাগরিক। যশোর, খুলনা, বরিশাল, ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন রোগীরা। রেখারানি সাহা, বেগম খাতুন, সৌরভ বিশ্বাস, আহিরচন্দ্র কীর্তনিয়া, টিপু চৌধুরীর মতো ‘বিদেশি’ রোগীদের সুবাদে রাজ্যের কোষাগারে মাত্র ৯ মাসে জমা হয়েছে ৯ লক্ষ ৪০ হাজার ৯৯ টাকা।
মেডিক্যাল সূত্রের খবর, প্রতিবেশী দেশের বেশিরভাগ রোগীই এসেছেন মূলত দু’ধরনের ব্যয়সাপেক্ষ চিকিৎসা কিছুটা সস্তায় করাতে। একটি হল উন্নত মানের ক্যান্সার চিকিৎসা। অন্যটি হল হার্টের অ্যাঞ্জিওপ্ল্যাস্টি-বাইপাসের মতো ব্যয়বহুল চিকিৎসা। অর্থো, নেফ্রো, সার্জারি বিভাগেও কেউ কেউ এসেছেন জটিল অপারেশন সারতে।
মেডিক্যালের এক কর্মী বলেন, এই ৫৫ জনের মধ্যে ব্রেস্ট ক্যান্সারের জন্য রেখারানিদেবীর চিকিৎসা বাবদই সবথেকে বেশি আয় হয়েছে মেডিক্যালের—দু’লক্ষ টাকা! সর্বনিম্ন আয় হল ডে কেয়ার বাবদ একদিনের খরচ—১৮০০ টাকা। নয়া নিয়মে বাংলাদেশ সহ বিদেশি রাষ্ট্রের রোগীদের ক্ষেত্রে অবশ্য চিকিৎসা খরচ মেটাতে হয়েছে পকেট থেকে। তবে বলা বাহুল্য, সেই খরচ প্রাইভেট হাসপাতালের তুলনায় অনেকটাই কম। যেমন, একদিন ওয়ার্ডে থাকার খরচ ১৮০০ টাকা। আইসিইউ-সিসিইউতে দৈনিক খরচ ৩০০০ টাকা। আর অপারেশন? সেটাও পূর্ব নির্ধারিত স্বাস্থ্যসাথীর প্যাকেজ অনুযায়ী চূড়ান্ত করা হয়। হাসপাতালের সুপার তথা উপাধ্যক্ষ ডাঃ অঞ্জন অধিকারী বলেন, ‘বিদেশি রোগীদের ক্ষেত্রে রাজ্যের নতুন নীতিতে খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি। কোষাগার সমৃদ্ধ হচ্ছে। সেই অর্থে রাজ্যের রোগীদের আরও উন্নত পরিষেবা দেওয়া সম্ভব। আমরা আশাবাদী।’