এই সময়: সুপ্রিম কোর্টে বিষয়টি বিচারাধীন। তবে তার আগেই বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ খণ্ডন করা হলো। এদিন রাজভবনের তরফে একটি তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। রিপোর্টটি তৈরি করেছেন পুদুচেরি জুডিশিয়াল সার্ভিসের নগর এবং দায়রা আদালতের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক ডি রামাবাথিরন।সেখানে দাবি করা হয়েছে, বোসের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যাসত্য যাচাই করতে আটজন সাক্ষীর সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তাতে বোঝা গিয়েছে গোটা অভিযোগটাই মিথ্যা। তৃণমূল অবশ্য এই রিপোর্টকে ‘আবর্জনা’ বলে কটাক্ষ করে জানিয়েছে, নিজেই তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে নিজেকেই ‘ক্লিনচিট’ দিচ্ছেন রাজ্যপাল!
গত ২ মে বোসের বিরুদ্ধে রাজভবনের অস্থায়ী এক মহিলা কর্মী যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন। কিন্তু সাংবিধানিক রক্ষাকবচ থাকায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগে তদন্ত করা যায় না বলে কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি কলকাতা পুলিশ। অভিযোগকারীর তরফে বলা হয়েছিল, গত ২৪ এপ্রিল রাজ্যপাল আলোচনার সময়ে তাঁর শ্লীলতাহানি করেন।
তরুণীর দাবি, ২৪ এপ্রিলের ঘটনার পরে ২ মে আবার তাঁকে ডাকেন রাজ্যপাল। আগের দিনের ঘটনার কথা ভেবে তিনি রাজভবনে কর্মরত এক সুপারভাইজ়ারকে সঙ্গে নিয়ে যান। তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, সুপারভাইজার জানিয়েছেন, তিনি এবং তরুণী এডিসির অনুমতি নিয়ে রাজ্যপালের ঘরে গিয়েছিলেন। পরে বোসের অনুমতি নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে অভিযোগকারিণীকেও বেরিয়ে আসার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু তরুণী বসে থাকেন। তাই রাজ্যপালের মনে হয়েছিল, অভিযোগকারিণী আলাদা করে তাঁকে কিছু বলতে চান।
২ মে কলকাতায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা স্পেশ্যাল প্রোটেকশন গ্রুপ (এসপিজি)-এর সদস্যেরা পৌঁছে গিয়েছিলেন রাজভবনে। ওই সময়ে রাজ্যপাল কী ভাবে কোনও আপত্তিকর কাজে যুক্ত থাকতে পারেন, সেই প্রশ্নও তোলা হয়েছে রিপোর্টে।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারক রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন যে, রাজভবনের মহিলা কর্মীদের সঙ্গে তাঁর কথা বলে মনে হয়নি যে, কেউ অস্বস্তিতে রয়েছেন। পরিশেষে গোটা অভিযোগটাকেই মিথ্যা বলে দাবি করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। এই রিপোর্ট নিয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘রাজ্যপাল তদন্ত রিপোর্টের নামে কিছু আবর্জনা প্রকাশ করেছেন। নিগৃহীতা সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন। যদি রাজ্যপাল সত্যিই নিরপরাধ হন, তা হলে তো তাঁর বলা উচিত আমি কোনও রক্ষাকবচ না নিয়ে পুলিশের তদন্তের সম্মুখীন হব।’