'আগামী লড়াই আরও কঠিন', তৃণমূল স্তরের নেতাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন অভিষেক...
আজকাল | ২১ জুলাই ২০২৪
আজকাল ওয়েবডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনের ফল বেরিয়েছিল ৪ জুন। তারপর থেকে রাজনৈতিক সভা, কোনো বৈঠকেই দেখা যায়নি অভিষেক ব্যানার্জিকে। এই কয়েকটা দিন কোথায় ছিলেন অভিষেক? ধর্মতলায় ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ থেকে নিজেই সেই প্রশ্নের জবাব দিলেন তিনি। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক জানান, 'আগামীদিনের লড়াই আরও বড়, আরও কঠিন। লোকসভা নির্বাচনের পর আমি পর্যালোচনা করেছি। তিন মাসের মধ্যে আপনারা তার ফল দেখতে পাবেন। যাঁরা পঞ্চায়েতে নির্বাচিত হয়েছেন, পুরসভায় নির্বাচিত হয়েছেন তাঁরা যদি ভেবে থাকেন যে কাজ মিটে গেছে তাহলে তাঁরা ভুল ভাবছেন। লোকসভা বা বিধানসভায় যদি দল ভাল ফল না করে তাহলে আপনাদের বিরুদ্ধে কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি ভেবে থাকেন ভোটের আগে অভিষেক আসবে, মমতা আসবেন, দলকে জিতিয়ে দেবেন আপনারা কিছুই করবেন না সেটা যেন একেবারেই না হয়।'
২০২৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা ভোট। লোকসভা এবং উপনির্বাচনে বিরোধীদের কার্যত হোয়াইটওয়াশ করার পরেও ইতিমধ্যেই যে বিধানসভার প্রস্তুতিতে অভিষেক নেমে পড়েছেন এদিন তারই ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন। তাঁর কথায়, 'আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই। আগামী দিনের জয় যেন ২০১৬ সালের জয়, ২০২১ সালের জয়কে ছাপিয়ে সবথেকে বড় জয় হিসেবে বিবেচিত হয়। আমাদের আরও শৃঙ্খলাপরায়ণ হতে হবে। দলে যাঁরা নতুন এসেছেন তাঁদের তৃণমূলের লড়াই সম্পর্কে জানতে হবে। যাঁরা পুরনো নেতা নেত্রী তাঁদের নতুনদের পথ দেখাতে হবে। সামঞ্জস্য রেখে চলতে হবে।' নির্বাচনের আগে রাজ্যে প্রচারে এসে বিজেপির প্রচার, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা নিয়ে এদিন ফের সরব হন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বলেন, 'বাংলায় প্রচারে এসে বিজেপি বলেছিল ইস বার চারশো পার। ২৪০ আসনে আটকে গেছে। একা সরকার গড়তে পারেনি। আমাদের লোকসভায় ২৯ জন সাংসদ। রাজ্যসভায় ১৩ জন সাংসদ। ৪২ জন সাংসদ নিয়ে গোটা দেশে তৃণমূল বর্তমানে তৃতীয় বৃহত্তম দল। ইডি, সিবিআইয়ের গর্জনের থেকে মানুষের গর্জন অনেক বেশি। যে সন্দেশখালির ঘটনাকে হাতিয়ার করে বিজেপি সারা দেশের কাছে বাংলাকে ছোট করেছিল সেখান থেকে তৃণমূল তিন লক্ষের বেশি ভোটে জিতেছে। প্রচারে এসে বিজেপি বলেছিল, তৃণমূলকে টাইট দেব। কী করে টাইট দিতে হয় সেটা বাংলার মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছে।'
সদ্য নিট পরীক্ষায় দুর্নীতি নিয়ে উত্তাল গোটা দেশ। দিল্লি থেকে বাংলা প্রত্যেক জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভের আঁচ। সেই প্রসঙ্গে এদিন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর গ্রেপ্তারি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন অভিষেক। জানান, '২০২২ সালের ২১ জুলাইয়ের সভার পরের দিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করেছিল। তৃণমূল কখনও কোনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়নি। নিট পরীক্ষায় যে এত বড় দুর্নীতি হল একবারও কেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে গ্রেপ্তার করা হল না? এই বৈষম্য কেন?' অভিষেকের বক্তব্যে এদিন আরও একবার উঠে এল কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রসঙ্গ। তাঁর কথায়, 'বিজেপির নেতারা মানুষকে শোষণ করেছে, অত্যাচার করেছে। গরীবদের ১০০ দিনের টাকা দেয়নি। মিড ডে মিলের টাকা দেয়নি। আবাস যোজনার টাকা দেয়নি। আমি বলে যাচ্ছি, যাঁদের নাম আবাসের তালিকায় আছে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সবাইকে টাকা দেবে তৃণমূল কংগ্রেস।' নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকেই ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছে শাসক দল। লোকসভায় জিতলেও পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে পুর এলাকাগুলিতে ভোটের নিরিখে পিছিয়ে পড়েছে তৃণমূল। সেখানে ভোট ফেরাতে জোর দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। পাশাপশি অভিষেককেও যে আলাদা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারও ইঙ্গিত মিলল রবিবার।