যদিও মমতা বেশ জোরের সঙ্গেই তা খারিজ করে দেন। প্রকাশ্যেই অসন্তোষের ইঙ্গিত ফুটে ওঠে তাঁর চোখে-মুখে। রীতিমতো শামিরুলের নাম করে ডেকে মমতা বলেন, "আমি নিজে পড়েছি এটা ঠিক আছে, কোনটার কথা বলছ শামিরুল, সাম্যের গান গাই?" তারপর আবার ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, "ইকবাল বলেছে সারে জাঁহাসে আচ্ছা। এসব আমায় নতুন করে শেখাবে না, এগুলো আমার মুখস্থ।" এরপর 'সাঁরে জাঁহাসে আচ্ছা'-র প্রথম স্তবকটি ফের বলে শোনান তিনি। এদিন মমতা তাঁর বক্তব্যে বার বারই টেনে আনেন নজরুলের প্রসঙ্গ। বলেন, "মনে রাখবেন, নজরুল লিখেছিলেন, সাম্যের গান গাই, আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনও ভেদাভেদ নেই (নাই)... কাজী নজরুল লিখেছিলেন, কোরান-পুরাণ, বেদ-বেদান্ত, বাইবেল-ত্রিপিটক। গ্রন্থসাহেব-জেন্দাবেস্তা পড়ে যাও যত শখ।"
এদিন মমতা আরও বলেন, "বাংলা ছাড়া দেশ চলতে পারে না।মনে রাখবেন, জাতীয় সংগীত কার লেখা? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর জন্মভিটে কোথায়? বাংলায়। এই মাটি জাতীয় সংগীতের হোতা। স্বাধীনতার যুদ্ধে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসের জয়হিন্দ স্লোগান। তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি দেব স্বাধীনতা, দেশকে এগিয়ে দিয়েছিল। বন্দেমাতরম, দেশকে বন্দনা করার স্লোগান, কার? বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্য়ায়ের। তাঁর বাড়িও এই বাংলায়। গান্ধীজি গুজরাটের মানুষ হলেও জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন এই বাংলায়। ৩ জায়গায় স্বাধীনতার আগেই স্বাধীনতা ঘোষণা হয়েছিল দেশে, তার মধ্যে একটা তাম্রলিপ্ত সরকার, একটা বালিয়া আরেকটা সম্ভবত মহারাষ্ট্রের সাতারা। বাংলা ছাড়া স্বাধীনতা আসত না। বাংলা ছাড়া নবজাগরণ হত না। বাংলা ছাড়া সতীদাহ প্রথা, বাল্যবিবাহ রদ হত না। বিধবা বিবাহ চালু হত না।"