জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কোটা আন্দোলনকে ঘিরে অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ। দেশের বিভিন্ন জায়গায় দফায় দফায় সংঘর্ষে এখনওপর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১৫০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। ফলে গোটা দেশেই এক অস্থির পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে থেকে এনিয়ে মুখ খুললেন সতর্ক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, চিন্তা করবেন না। বাংলাদেশে যদি আপনাদের কোনও পরিজন থাকে, কেউ পড়াশোনা করতে যান, কেউ চিকিত্সা করতে গিয়ে ফিরতে না পারেন তা হলে আমি তাদের পাশে আছি। বাংলাদেশ নিয়ে আমি কথা বলতে পারি না। কারও ওটা আলাদা একটা দেশ। আমি বলতে পারি না। যা বলার ভারত সরকার বলবে। কিন্তু এটুকু বলতে পারি, অসহায় মানুষ যদি বাংলার দরজা খটখটানি করে তাহলে আমি তাদের নিশ্চয় আশ্রয় দেব। তার কারণ এটা রাষ্ট্রসংঘের একটা রেজলিউশন আছে। কেউ যদি রিফিউজি হয়ে যায় তাহলে তাকে তার পার্শবর্তী এলাকা সম্মান জানাবে। অসমে একটা গন্ডগোল হয়েছিল বড়ো দের সঙ্গে। আলিপুরদুয়ারের বহু মানুষ দীর্ঘদিন ছিলেন।। আমিও সেখানে গিয়েছিলাম। কিন্তু আপনাদের কাছে আবেদন রইল আমরা যেন কোনও প্ররোচনাতে না যাই। যারাই রক্ত ঝোরুক তাদের প্রতি আমাদের সহমর্মীতা থাকবে। আমরাও খবর রাখছি।
এদিকে, বাংলাদেশের কোটা ব্যবস্থা নিয়ে বড় রায় দিল সেদেশের সুপ্রিম কোর্ট। ওই রায়ে জোর ধাক্কা খেতে চলেছে আওয়ামি লিগ সরকার। রায় বলা হয়েছে, দেশের সরকারি চাকরিতে মোট ৭ শতাংশ সংরক্ষণ থাকবে। তার মধ্যে ৫ শতাংশ থাকবে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানসন্ততিদের জন্য। বাকী ২ শতাংশ থাকবে অন্য শ্রেণির জন্য। অর্থাত্ দেশের ৯৩ শতাংশ চাকরি হবে মেধার ভিত্তিতে। সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে আরও বলেছে, ছাত্ররা ক্যাম্পাসে ফিরে আসুক।
উল্লেখ্য, এর আগে এই গোলমালের মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নাতিপুতিরা চাকরি পাবে না তো রজাকারদের নাতিপুতিরা চাকরি পাবে! অর্থাত্ আন্দোলনকারীদের একপ্রকার রাজাকার বলেই দেগে দেন শেখ হাসিনা। এর আদে দেশের ৩০ শতাংশ সংরক্ষণ ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য, বাকী ২৬ শতাংশ সংরক্ষেণ ছিল মহিলা, জেলা, উপজাতিদের জন্য।
অন্যদিকে, দেশের পরিস্থতি এমন একটা জায়গায় চলে গিয়েছিল তাতে শ্যুট অ্যাট সাইটের অর্ডার দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। কারফিউ অমান্যকারীদের জন্য এই নির্দেশ জারি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়ুল কাদের বলেছেন, 'রবিবার পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেলে জনতার উপর গুলি চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে।' আগামী রবিবার পর্যন্ত বাংলাদেশে কার্ফু চলবে। তারপর পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।