সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা ভোটে বিরাট জয়ের পরও আত্মতুষ্টির জায়গা নেই। ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটে জয়ের লক্ষ্য এখন থেকেই কর্মীদের সতর্ক করে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একুশের মঞ্চ থেকে নিচুতলার জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে অভিষেকের বার্তা, “নিজের কথা ভাবলে হবে না, কর্মীদের কথা ভাবতে হবে।”
২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha 2024) প্রচার পর্বে পঞ্চায়েত এবং পুরসভা স্তরের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ শুনতে হয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বকে। নীচুতলার নেতাদের বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ রয়েছে সেটা নজর এড়ায়নি অভিষেকেরও। ভোট প্রচার চলাকালীনই তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, যে যে কাউন্সিলর বা পঞ্চায়েত সদস্যের এলাকায় দল খারাপ ফল করবে, তাঁদের শাস্তি পেতে হবে। একুশের মঞ্চ থেকেও সেই বার্তা শোনা গেল অভিষেকের মুখে।
তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সাফ কথা, “পঞ্চায়েত, পুরসভার জনপ্রতিনিধিদের নিজেদের কথা ভাবলে চলবে না। আগে ভাবতে হবে কর্মীদের কথা।” অভিষেকের কথায়, তৃণমূলের স্থানীয় স্তরের জনপ্রতিনিধিরা পঞ্চায়েত এবং পুরসভার নির্বাচনে নিজেদের উজাড় করে দেন। কিন্তু লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে গাছাড়া মনোভাব দেখা যায়। অভিষেকের সাফ কথা, যারা এই ধরনের আচরণ করবে, সবাইকে শাস্তি পেতে হবে। নিচুতলার নেতাদের উদ্দেশে তাঁর হুঁশিয়ারি, “যত বড় নেতার ছত্রছায়াতেই থাকুন, কাউকে রেয়াত করা হবে না।”
অভিষেকের (Abhishek Banerjee) সাফ কথা, পঞ্চায়েত এবং পুরসভার নির্বাচনে নিজের জন্য লড়াই করব। আর পুরসভা এবং লোকসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমার এলাকায় এসে একটা সভা করে যাবেন, আর দল জিতে যাবে। সেটা হবে না। নিজের ভোটে যারা গায়ে গতরে খেটেছেন, তেমন বিধানসভা-লোকসভা নির্বাচনেও গায়ে গতরে খাটতে হবে। নাহলে সবাইকে শাস্তি পেতে হবে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলছেন, “আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই। আমাদের আরও শৃঙ্খলাপরায়ণ হতে হবে, আরও বিনম্র হতে হবে। ছাব্বিশে আমরা জিতব, সেই জয় যেন ২০১৬ সালের থেকেও বড় হয়, ২০২১ সালের থেকেও বড় হয়। সেই শপথ নিয়ে একুশের সভা থেকে ফিরতে হবে।” এদিনের সভা থেকে নবীন- প্রবীণের সমন্বয়ের বার্তাও দিয়েছেন অভিষেক। তাঁর বার্তা, “পুরনোদের অভিজ্ঞতা আর নতুনদের উৎসাহ-উদ্দীপনা তৃণমূলের একই বৃন্তে দু’টি কুসুম। সবাইকে সামঞ্জস্য রেখে চলতে হবে।’’
একই সঙ্গে এদিনের মঞ্চ থেকে দলবদলুদেরও বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। অভিষেক বলছেন, “একুশের ভোটের আগে যারা দলে থেকে কাজ করতে পারছিলেন না। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল, তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে আমরা দলে ফেরত নিয়েছি। কিন্তু সেদিন কথা দিয়েছিলাম তৃণমূল কর্মীদের উপর কাউকে ছড়ি ঘোরাতে দেব না। ৩ বছরে কাউকে ছড়ি ঘোরাতে দিইনি।” আগামীদিনেও যে দলবদলুরা বেশি গুরুত্ব পাবেন না, সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তৃণমূলের সেনাপতি।