ধর্মতলার শহিদ মঞ্চে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা করলেন অখিলেশ যাদব। 'আদরণীয় মমতা দিদির আহ্বানে আমি আজ এখানে আসতে পেরে ধন্য'। এইভাবেই রবিবার ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে বক্তব্য শুরু করেন সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো। বাংলায় BJP-কে রুখে দেওয়ার জন্য তৃণমূলকে ধন্যবাদ জানান তিনি। একইসঙ্গে ফের একবার অখিলেশের ভবিষ্যদ্বাণী, 'দিল্লির সরকার শীঘ্রই পড়ে যাবে।'রবিবার এয়ারপোর্টে নেমেই সমাজবাদী পার্টির প্রধান পৌঁছে যান কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনে। এরপর একসঙ্গে তাঁরা পৌঁছন ২১ জুলাইয়ের শহিদ মঞ্চে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ সমস্ত নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি বক্তব্য রাখতে ওঠেন। প্রথমেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়ে অখিলেশ যাদব বলেন, 'সবচেয়ে জনপ্রিয় এই মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বানে আমি এখানে এসেছি। মমতা দিদিজিকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি, এই অনুষ্ঠানে আসার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। এয়ারপোর্ট থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবন পর্যন্ত রাস্তায় দেখলাম কর্মী-সমর্থকদের উচ্ছ্বাস। তাঁদের উদ্দেশে যেভাবে মমতা দিদি হাত নাড়লেন, আমি আপ্লুত।'
এরপরই অখিলেশ যাদবের সংযোজন, 'গত নির্বাচনে দিদি যেভাবে জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছিলেন, তাঁকে কুর্নিশ জানিয়ে আদরণীয় দিদির জন্য দু কলম লিখেছিলাম। তাঁর পায়ে চোট ছিল, চলতে পারছিলেন না, তাও লড়াই থামাননি। আমি লিখেছিলাম, এক একেলি লড় যায়েগি, জিতেগি অউর বড় যায়েগি। পায়ে প্লাস্টার বেঁধে সরকার গঠনের লক্ষ্যে তিনি লড়ে যাচ্ছিলেন। দিদি তাঁর কর্মীদের সঙ্গেই প্রাণ হাতে করে নিয়ে লড়ে যাচ্ছেন। এমন নেতা খুব কম হয়।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি তৃণমূলের নেতা-কর্মীদেরও প্রশংসায় ভরিয়ে দেন অখিলেশ যাদব। তিনি বলেন, 'অত্যাচারের বিরুদ্ধে যাঁরা জানকবুল করেছেন, সেই শহিদদের উদ্দেশে আমরা আজ স্মৃতিচারণ করছি। তাঁরাই দেশের গৌরবের ইতিহাস রচনা করেন। দলের কাজে এই সমস্ত কর্মীরাই সম্পদ যারা প্রাণ দিয়ে দিতে পারেন দলের জন্য। কর্মীরা সবচেয়ে বড়, তাঁরাই দলের বুনিয়াদ গঠন করেন। জীবন উৎসর্গ করার মতো কর্মী সব দলে থাকে না। দিদি তাঁদের সকলকে স্মরণ করেন প্রতিবছর। যে সকল কর্মীরা দিদির সঙ্গে প্রথম দিন থেকে লড়াইয়ে পাশে রয়েছেন, তাঁদের কুর্নিশ জানাই।' তিনি আরও বলেন, 'আপনারা বাংলা থেকে BJP-কে রুখে দিয়েছেন। উত্তরপ্রদেশও আপনাদের সঙ্গে পা মিলিয়েছে। এখানকার সমস্ত কর্মীদের বলব, আপনাদের নেতা অনেক বড়। তিনি লড়াই করে, জীবন বাজি রেখে, সংঘর্ষ করে এই দল তৈরি করেছেন। অনেকদূর যেতে হবে। আগামীদিনেও দিদির পাশে আপনারা থাকবেন বলেই আমার বিশ্বাস। আমরাও আপনাদের পাশে থাকব সর্বদা। '
ফের একবার অখিলেশ যাদবের ভবিষ্যদ্বাণী, 'দিল্লির সরকারে যারা বসে রয়েছেন, তারা নিয়মিত ষড়যন্ত্র করছেন। তবে দিদির সঙ্গে আপনাদের মতো কর্মীরা রয়েছেন। তারা সব ষড়যন্ত্র রুখে দেবেন। সততা এবং নির্ভয়ে যারা রুখে দাঁড়ান, জয় তাদেরই হয়। আমি লোকসভায় বলেছি, আজও বলছি, এই সরকার বেশিদিন টিকবে না। দিল্লির এই ভীতু সরকার, দুর্নীতির সরকার শীঘ্রই পড়ে যাবে। দেশ জেগে উঠেছে। এই ধরণের নেতিবাচক শক্তির অবসান ঘটাবে তারা। ইতিবাচক রাজনীতির সময় আসতে চলেছে। আমরা সকলে মিলে দেশকে বাঁচাব, সংবিধান বাঁচাব, সম্প্রীতি রক্ষা করব।'
অখিলেশকে ধন্যবাদ জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আপনাকে মুম্বইতে সাক্ষাতের সময় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। সেই আহ্বানে আপনি সাড়া দিয়েছেন। আপনার দলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ, আপনি উত্তরপ্রদেশে যে খেলা দেখিয়েছেন, তাতে তো BJP-র পদত্যাগ করা উচিত ছিল।'