‘আইনশৃঙ্খলার অবনতি থেকে নজর ঘোরাতেই…’, কটাক্ষ বিরোধীদের
এই সময় | ২২ জুলাই ২০২৪
লোকসভা নির্বাচনে বিপুল জয় এবং উপনির্বাচনে বিরোধীদের ধূলিসাৎ করে দেওয়ার পর কলকাতার বুকে ২১ জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশ থেকে আগামীর বার্তা দিল তৃণমূল কংগ্রেস। শহিদ তর্পনের পাশাপাশি ২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের লড়াইয়ের ডাক দেওয়া হল এদিনের মঞ্চ থেকেই। কর্মী-সমর্থকদের দেওয়া হল একাধিক নির্দেশিকা। তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের বক্তব্য নিয়ে পাল্টা আক্রমণ সিপিএম-বিজেপির।এদিনের সমাবেশে একাধারে, তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের সংযত হওয়ার বার্তা, অন্যদিকে কর্মী-সমর্থকদের ‘লোভ’ সংবরণ করে চলার নির্দেশ দেয় তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। দুর্নীতির সঙ্গে কোনওভাবেই আপস করা হবে না বলে কড়া বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের কোনও নেতা অনিয়ম বা অন্যায়ের সঙ্গে যুক্ত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে দল কড়া ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে দলের তরফে। তবে, তৃণমূলের এই শহিদ সমাবেশের আয়োজনকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি।
বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘শহিদদের সম্মান জানানো নয়, বরং তাঁদের পরিবারের আবেগের সঙ্গে প্রতারণা করে একুশে জুলাই শহিদ দিবস পালিত হচ্ছে।’ বিজেপির বক্তব্যের পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘এঁদের কটুক্তি এবং নিম্নরুচির সমালোচনা করা ছাড়া আর কোনও কাজ নেই। ওঁদের দলে নিজেদের মধ্যে বিবাদ রয়েছে। কেন্দ্রে নড়বড়ে সরকার, বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদীকে আরএসএসের কষাঘাত এবং সর্বোপরি বাংলায় চূড়ান্ত খারাপ ফলের পর এইসব বলা ছাড়া ওঁদের কোনও কাজ নেই।’ শহিদ সমাবেশকে কটাক্ষ করে শমীক বলেন, ‘শহিদের মঞ্চে ক'জন শহিদ হয়েছেন তাঁদের নাম একবারও শুনেছেন ? রাজ্যে যে চূড়ান্ত আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে তার থেকে মানুষের নজর ঘোরাতেই এই ধরনের কথা।’ পাল্টা জয়প্রকাশ বলেন, ‘আজকে উনি যে ভোটার কার্ড নিয়ে ভোট দিতে যান, সেটা তৈরি হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনের ফলে। উনি সেটা ভুলে গিয়েছেন।’ আদতে, বিজেপির পরাজয়ের ‘আর্তনাদ’ শোনা যাচ্ছে বলে দাবি তাঁর।
এদিনের সভায় তৃণমূল কংগ্রেসের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে কটাক্ষ করে জানান, এসএসসি কেলেঙ্কারির জন্য তৎকালীন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে ইডি হানা দেয়, পরবর্তীতে তাঁকে গ্রেপ্তারও করা হয়। অথচ, নিট কেলেঙ্কারির পর কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে একই কারণে কেন গ্রেপ্তার করা হবে না? এর পাল্টা শমীকের বক্তব্য, ‘যাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁকে আদালতের নির্দেশেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
বাম আমলে কলকাতার বুকে ১৩জন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর প্রাণহানির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই প্রত্যেক বছর এই দিনটিকে শহিদ দিবস হিসেবে পালন করে থাকে তৃণমূল কংগ্রেস। তাঁদের এই আয়োজনকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি সিপিএম। এদিন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘আইনের শাসনের বদলে রাজ্যে মাতব্বরির শাসন কায়েম করতে চাইছে তৃণমূল। পাশাপাশি ধর্মকে ব্যবহার করে বিজেপিকে সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।’ দুর্নীতির বিরুদ্ধে তৃণমূলের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির বিরোধিতার বিষয়টি নিয়ে সেলিমের খোঁচা, ‘কত জনের বিরুদ্ধে উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ব্যবস্থা নিয়েছেন? যতজন জেলে আছেন, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, যারা জমির দখল নিয়েছে, কতজনকে তিনি বের করেছেন দল থেকে?’