• প্রশাসনের ভরসায় না থেকে ভাঙন মোকাবিলায় গঙ্গাপাড়ের বাসিন্দারা
    বর্তমান | ২২ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, মানিকচক: গোপালপুরে গঙ্গা ভাঙন রুখতে ব্যর্থ প্রশাসন। তাই তাদের ভরসায় না থেকে গ্রামবাসীকে নিয়ে ভাঙন রোধের জন্য কাজ করতে উদ্যোগী হল গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধ অ্যাকশন নাগরিক কমিটি। গ্রামবাসীর সহযোগিতায় শীঘ্রই জিও সিন্থেটিক টিউবের মাধম্যে প্রায় ১০০ মিটার এলাকায় শুরু হবে ভাঙন রোধের কাজ। রবিবার গোপালপুরের শান্তিপুর এলাকায় সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনটাই দাবি করলেন গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধ অ্যাকশন নাগরিক কমিটির সদস্যরা।


    মানিকচকের গোপালপুর পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় গঙ্গার ত্রাস অব্যাহত। শুরু হয়েছে ব্যাপক নদীর পাড় ভাঙন। উত্তর ও দক্ষিণ হুকুমতটোলা, এলাহিটোলা ও কামালতিপুর এলাকা নিশ্চিহ্ন হওয়ার মুখে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কামালতিপুর এলাকা। এখানে প্রায় কয়েকশো বিঘা জমি গঙ্গার গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। একেবারে বাঁধের গা ঘেঁষে বইছে গঙ্গা নদী। নদীর গর্জনে ঘুম উড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। নদীর গর্ভে নিজেদের শেষ সম্বল তলিয়ে যাওয়ার আগে তাই বাড়িঘর ভেঙে অন্যত্র সরে যাচ্ছেন তাঁরা। শেখ আয়েস, মহম্মদ ফারুক আলি সহ অন্যরা নিজেদের বাড়ি ভাঙতে ব্যস্ত। স্থানীয় গৃহবধূ নাজমা বিবি বলেন, নদীর জন্য বাড়ি ভাঙতে হচ্ছে। নদীর পাড় ভাঙতে ভাঙতে গঙ্গা  বাড়ির কাছে চলে এসেছে। তাই বাড়িঘর ভেঙে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছি। 


    বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে গঙ্গার ভাঙন চললেও বাঁধ দেওয়ার ব্যাপারে প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। এই অবস্থায় প্রশাসনের ভরসায় না থেকে স্থানীয়রাই ভাঙন মোকাবিলায় কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছেন। সেই কাজও হবে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে।


    গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধ অ্যাকশন নাগরিক কমিটির সদস্য বিপ্লব ভট্টাচার্য  বলেন, গত কয়েক বছরে প্রায় ১৫ কিমি এলাকায় ভাঙন হয়েছে। প্রশাসনকে বারবার আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু তারা কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও ভাঙন রোধ সম্ভব হয়নি। তাই আমাদের সংগঠন ও গ্রামবাসীরা যৌথভাবে অর্থ সংগ্রহ করে জিও সিন্থেটিক টিউবের মাধ্যমে ভাঙন রোধের কাজ করবে।


    কীভাবে হবে কাজ? নদীর চরের মাটি এনে টিউবে ভরে নদীর পাড়ে ফেলে দেওয়া হবে। এই টিউটি প্রায় ২৫ মিটার চওড়া এবং ৮০ মিটার লম্বা হবে। 


    ওই কমিটির সদস্য বিপ্লবের কথায়, আমরা এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেখিয়ে দিতে চাই, কীভাবে স্থায়ী ভাঙন রোধ করা যায়।


    এবিষয়ে মালদহ জেলা সেচ দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, এই সম্পর্কে আমার এখনও কিছু জানা নেই। তবে তাঁরা পরীক্ষামূলকভাবে নদীর পাড়ে কাজ করতে পারেন। তার জন্যও আমাদের কাছে আবেদন জানাতে হবে। এখনও আবেদনপত্র আসেনি। 
  • Link to this news (বর্তমান)