নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: কেন্দ্রীয় বঞ্চনা সত্ত্বেও রাজ্যে কর্ম নিশ্চয়তা প্রকল্প চালু হয়ে গিয়েছে। আর রাজ্য সরকারের চালু কর্মশ্রী প্রকল্পে সাফল্য পেল নদীয়া জেলা। জবকার্ড হোল্ডারদের কাজ দেওয়ার নিরিখে রাজ্যের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সীমান্তের এই জেলা। চলতি অর্থবর্ষ শুরুর মাত্র চার মাসের মধ্যেই প্রায় সাড়ে চার হাজার প্রকল্পে নদীয়া জেলার এক লক্ষ ২৮ হাজার জবকার্ড হোল্ডার কাজ পেয়েছেন। লোকসভা ভোটপর্বের মধ্যেই এই প্রকল্পে নদীয়া জেলায় ৬২লক্ষ ১৬ হাজার কর্মদিবস তৈরি হয়েছে।
তবে শ্রমিকদের কাজ দেওয়ার নিরিখে প্রথম স্থানে রয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলা। সেখানে সাড়ে ছ’হাজার প্রকল্পে এক লক্ষ ৩০হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ পেয়েছেন। যদিও কর্মদিবস তৈরির দিক থেকে নদীয়ার চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে ওই জেলা। পূর্ব বর্ধমানে প্রায় ৫৯লক্ষ কর্মদিবস তৈরি হয়েছে। কর্মসংস্থান তৈরির নিরিখে তৃতীয় স্থানে রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর। চতুর্থ স্থানে রয়েছে বাঁকুড়া জেলা। জানা গিয়েছে, সারা রাজ্য এই প্রকল্পে কাজ পেয়েছেন দশ লক্ষের বেশি শ্রমিক। নদীয়া জেলায় জবকার্ড হোল্ডাররা গড়ে ৫১দিন কাজ পেয়েছেন। যেখানে গোটা রাজ্যের গড় কর্মদিবস ৪৮দিন।
নদীয়ার জেলাশাসক অরুণ প্রসাদ বলেন, কর্মশ্রী প্রকল্প গ্রামবাংলার অর্থনীতির শ্রীবৃদ্ধি ঘটাচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি বেশি সংখ্যক জবকার্ড হোল্ডার কর্মশ্রী প্রকল্পের আওতায় কাজ করুক। জেলায় বিভিন্ন প্রকল্পে যোগ্যতা অনুযায়ী শ্রমিকদের কাজের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিভিন্ন দপ্তর মিলিতভাবে এই কাজ বাস্তবায়ন করছে।
প্রসঙ্গত, ১০০দিনের কাজের টাকা মেটানো নিয়ে অনড় দিল্লির বিজেপি সরকার। বাংলার হকের টাকা নানা অজুহাতে আটকে রয়েছে দিল্লিতে। তদন্ত করতে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল মাঝেমধ্যেই বাংলায় এসেছে। অথচ প্রতিবারই খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। তারপরও মোদি সরকারের একগুঁয়েমিতে গত কয়েক বছর ধরে বাংলায় একশো দিনের কাজ বন্ধ রয়েছে। কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার গর্জে উঠেছেন। যা গ্রাম বাংলায় বহু পরিবারের অন্নসংস্থান থেকে গ্রামের অর্থনীতি সচল রাখার কাজ করত। যেকারণে বিকল্প হিসেবে কর্মশ্রী প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। গ্রামের অর্থনীতি সচল রাখা ও সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে এই প্রকল্পে জোর দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। ১০০দিনের পরিবর্তে গড়ে ৫০দিনের কাজ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। উদ্দেশ্যে, মানুষের হাতে সরাসরি টাকা পৌঁছে দেওয়া।
জানা গিয়েছে, ২০২৪-২৫অর্থ বছরের প্রথম চার মাসেই, লোকসভা নির্বাচনের মধ্যেই রাজ্যজুড়ে এই কর্মশ্রী প্রকল্পে উল্লেখ্যযোগ্য সাফল্য এসেছে। দিল্লির মুখাপেক্ষী হয়ে না থেকে বাংলার মানুষের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ‘একলা চলা’ নীতিই নিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। রাজ্যজুড়ে প্রায় ৭৬হাজার প্রকল্পে দশ লক্ষের বেশি জবকার্ড হোল্ডার কাজ পেয়েছেন। শ্রমিকদের মজুরি হিসেবে প্রায় ৯৮০কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। চার মাসে ৪কোটি ৮২লক্ষ কর্মদিবস তৈরি হয়েছে রাজ্যে।
এই প্রকল্পে বিভিন্ন পর্যায়ে দক্ষ শ্রমিকরা দৈনিক ৫০০টাকা পেয়েছেন। যাঁরা আংশিকভাবে দক্ষ তাঁরা দিনে ৩৭৫ টাকা, নতুন কর্মীরা ২৫০টাকা করে পেয়েছেন। যেখানে যেমন চাহিদা তা ব্লক বা পঞ্চায়েত অফিসে জানাচ্ছেন জবকার্ড হোল্ডাররা। সেইমতো কাজ বণ্টন করা হচ্ছে।