সাত লক্ষ বৃক্ষরোপণ করে নজির নাদনঘাটের ‘গাছ মাস্টার’-এর
বর্তমান | ২২ জুলাই ২০২৪
সংবাদদাতা, কালনা: পরিবেশ রক্ষায় সাত লক্ষ বৃক্ষরোপণ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কালনা মহকুমার নাদনঘাট থানার রামপুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক অরূপ চৌধুরী। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে জাতীয় ও শিক্ষারত্ন পুরস্কার। গড়ে তুলেছেন পঞ্চাশটির বেশি খণ্ডবন। আজ তিনি পরিচিত গাছ মাস্টার নামে। রাজ্য সহ ভিনরাজ্য থেকে তাঁর ডাক আসে পরিবেশ সচেতনতার বিভিন্ন সেমিনারে বক্তব্য রাখতে। পড়ুয়াদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাদানের পাশাপাশি সবুজ রক্ষার শিক্ষাও দিয়ে চলেছেন। আটান্ন বছরের অরূপ চৌধুরী গ্রামের সবুজ ঘেরা পরিবেশ বড় হয়েছেন। বড় হয়েও ভুলে যাননি সবুজের প্রয়োজনীয়তা। পঁচিশ বছর আগে তিনি উপলব্ধি করেছেন গাছ মানুষের সবচেয়ে বড় বন্ধু। সেই সময় থেকে বন্ধুবান্ধব থেকে আত্মীয় পরিজনদের বাড়িতে অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ থাকলে উপহার হিসেবে গাছ তুলে দিতেন। নিজের উদ্যোগে যখন যেখানে পেরেছেন নার্সারি থেকে গাছ কিনে রাস্তার ধারে বা ব্যক্তিগত ফাঁকা জায়গায় অনুমতি নিয়ে লাগানো শুরু করেন। ১৯৯৬ সালে স্কুলে গড়ে তোলেন গ্রিন স্কুল মুভমেন্ট। চালু করেন বৃক্ষশিশু পরস্কার, স্মৃতি বৃক্ষ রোপণ। ২০১১ সালে তিনি রাজ্য সরকারের শিক্ষারত্ন ও ২০১৬ জাতীয় শিক্ষক হিসাবে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পান। এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বৃক্ষরোপণ উদযাপনে তাঁর ডাক আসে। ইতিমধ্যে তিনি মেমারি মণ্ডলগ্রাম, বামুনিয়া, কুঞ্জনগর, পামরা, বড়শুল, নওপাড়া, বেন্দুয়া প্রভৃতি সহ বিভিন্ন স্কুলে প্রায় পঞ্চাশটি গ্রামে খণ্ডবন গড়ে তুলেছেন। তাঁর কথায়, গাছ শুধু জীবন বাঁচায় না। স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখে যুগের পর যুগ। যেমন কেউ ছোট ছেলেমেয়েদের বাড়ির বহু পুরানো গাছকে দেখিয়ে বলেন, এই গাছটা তোদের দাদু লাগিয়েছে। গাছ দাদুর স্মৃতি বেঁচে বাঁচিয়ে রেখেছে। অরূপবাবু গাছ লাগাতে আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে ডাক পেয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্বভারতী থেকে দিল্লির রাজভবনেও। তাঁর গাছের প্রতি ভালোবাসা, আন্তরিকতায় সকলে মুগ্ধ। পুর্ব বর্ধমান জেলা প্রকৃতি ও প্রাণিপ্রেমী সংঘের সভাপতি তিনি। রাজ্য সহ ভিন রাজ্যের পাঁচশোর বেশি পরিবেশ প্রেমীদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন গাছ গ্রুপ। তবে, সরকারি স্বীকৃতি এখনও অধরা।