• ভাড়াবাড়ি থেকে বধূর নলিকাটা দেহ উদ্ধার
    বর্তমান | ২২ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: আরামবাগ শহরে ভাড়া বাড়ি থেকে গৃহবধূর নলিকাটা দেহ উদ্ধার ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। মৃতার নাম সাবিনা বেগম(২৭)। রবিবার দুপুর ৩টে নাগাদ শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফ্ল্যাটবাড়ি থেকে রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার। তার পাশেই ছিল মহিলার দেড় বছরের কন্যাসন্তান। সে কাঁদতে কাঁদতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। পুলিস তাকে উদ্ধার করে। আরামবাগের এসডিপিও সুপ্রভাত চক্রবর্তী বলেন, এলোপাথাড়ি কুপিয়ে এক গৃহবধূকে খুন করা হয়েছে। পুলিস তদন্ত শুরু করেছে। অপরাধী খুব দ্রুত ধরা পড়বে। 


    স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের আজাদপল্লি এলাকায় সাবিনার বাপেরবাড়ি। বাড়িতে মা ও বোন রয়েছে। দু’বছর আগে বাবার মৃত্যু হয়। প্রায় ১০ বছর আগে খানাকুলের মাইনান এলাকায় সাবিনার বিয়ে হয়। প্রথমপক্ষের স্বামীর সঙ্গে একবছর আগে ডিভোর্স হয়ে যায়। তারপরই তিনি ১৯ বছরের এক যুবককে বিয়ে করেন। প্রথম পক্ষের কন্যাকে নিয়ে দ্বিতীয় পক্ষের স্বামীর সঙ্গে এনায়েতপল্লি এলাকায় থাকছিলেন। রবিবার বেলার দিকেও তাঁকে প্রতিবেশীরা বাইরে দেখেছিলেন। দুপুর আড়াইটার সময় ঘর থেকে শিশুকন্যার টানা কান্না শুনে প্রতিবেশীরা দেখতে যান। তখনই তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেয় পড়ে থাকতে দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির মালিককে বিষয়টি জানানো হয়। আরামবাগ থানার পুলিস এসে দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। বধূকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। 


    ফ্ল্যাটের দোতলার ঘরে ভাড়া থাকতেন সাবিনারা। প্রতিবেশী আফরিন সুলতানা বলেন, দুপুর ১২টা নাগাদ একটা লোককে মুখে রুমাল ঢাকা অবস্থায় ওই বাড়িতে ঢুকতে দেখেছিলাম। তাকে আর বেরতে দেখিনি। আড়াইটার নাগাদ বাচ্চাটাকে চিৎকার করে কাঁদতে শুনি। আশেপাশের মহিলারা বাচ্চাটাকে দেখতে বাড়িতে ঢুকেছিলেন। তাঁরাই উপরের ঘরের ভিতর মহিলার মৃতদেহ দেখতে পান। পাশে বাচ্চাটা কাঁদছিল। পুলিস এসে দেহ নিয়ে যায়। 


    অপর এক ভাড়াটিয়া নাসরিন বেগম বলেন, আমরা নীচেরতলায় ভাড়া থাকি। কয়েকদিন ধরে পরিবারটি ভাড়া থাকছিল। ওদের সঙ্গে পরিচয় হয়নি। বাড়ির উল্টোদিকের প্রতিবেশীরা বাচ্চার কান্না শুনতে পায়। বাচ্চাটি প্রায় এক ঘণ্টা ধরে কাঁদায় নেতিয়ে পড়েছিল। তবে বাড়ির নীচে থাকায় আমরা কোনও আওয়াজ শুনতে পায়নি। 


    বাড়ির মালিক কামাল হোসেন বলেন, সাবিনার বাপেরবাড়ি ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের আজাদপল্লিতে। ভালো পরিবারের মেয়ে। প্রথমবার বিয়েও হয়েছিল ভালো পরিবারে। দ্বিতীয় স্বামী শেখ মোতালেবর হক গড়েরঘাট রুটে গাড়ি চালায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর-২ ব্লকের যোতকানুরামগড় এলাকার ঠিকানা দিয়েছিল। বাড়ি ভাড়ার জন্য পাঁচদিন আগে ফোনে আমার সঙ্গে কথা বলেছিল। পরিচিত হওয়ায় বাড়ি ভাড়া দিয়েছিলাম। এদিন ঘটনাটি জানার পর পুলিসকে খবর দিই। পুলিস এসে দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। 


    আরামবাগ থানার তদন্তকারী এক অফিসার বলেন, মহিলার পায়ের উপরের অংশ, হাতের কব্জি, পেট ও গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ মারা হয়েছে। গলাটা কোনওরকমে ঝুলে ছিল। ঘরের মেঝেতে রক্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ছিল। বাড়ির মালিক, অপর ভাড়াটিয়া ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলা হবে। প্রাথমিকভাবে মহিলার পরিচিত কেউ খুন করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। মহিলার স্বামী সকালে কাজে বেরিয়ে যায় বলে জানা গিয়েছে। তারপর আর তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। তদন্ত চলছে।


     
  • Link to this news (বর্তমান)