নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: ‘দাদা, আমাদের ছবি তুলুন। আমরা বহরমপুর থেকে এসেছি’। শিয়ালদহ স্টেশনের বাইরে দাঁড়িয়ে বলে উঠলেন কয়েকজন। তাঁদের কারও গলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি, কারও গলায় ঝুলছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। হাতে ঘাসফুলের ঝান্ডা! জয় বাংলা, সোগ্লান দিতে দিতে তাঁরা বললেন, এবার মুর্শিদাবাদের ভিড়টা দেখে নিন। প্ল্যাটফর্ম থেকে তখন হাজার হাজার কর্মী ব্যানার হাতে এগিয়ে আসছেন। যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই মুর্শিদাবাদ জেলার। তৃণমূলের ক্যাম্পাসের সামনে এসে স্লোগানের আওয়াজ যেন আরও বেড়ে গেল। ক্যাম্প ছেড়ে এগিয়ে যাওয়ার সময় তাঁরা বলেও গেলেন, এবার ‘তিন-শূন্য’। সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে অধীরের পুরনো গড় বহরমপুর ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। মুর্শিদাবাদ জেলার তিনটি আসনেই ফুটেছে ঘাসফুল। স্বাভাবিকভাবেই এবার ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে তার ছাপ পড়েছে। রবিবার শিয়ালদহ স্টেশন হয়ে হাজার হাজার তৃণমূল কর্মী শহিদ সমাবেশে যোগদান করেছেন। তবে, পিছিয়ে নেই অন্যান্য জেলাও। বিশেষ করে উত্তর ২৪ পরগনা এবং নদীয়া জেলার সংখ্যা গরিষ্ঠ মানুষ ট্রেনে করে এসেছেন শিয়ালদহ। সেখান থেকে মিছিল করে ধর্মতলা। নজর কেড়েছেন মতুয়া সমর্থকরা। স্টেশন থেকে বেরিয়েই বাঁ হাতে ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের ক্যাম্প। এতদিন সেই ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকতেন প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তথা বালু দা। এবার ‘বালুহীন’ শিয়ালদহ! মঞ্চে দেখা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার একঝাঁক বিধায়ক ও নেতা। কর্মীরা কোথা থেকে আসছেন, তাঁদের ব্যানার দেখে ওই ক্যাম্প থেকে ঘোষণা করা হচ্ছিল নাম। একদল সমর্থকের ব্যানারে লেখাছিল বিস্কুট। তা নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি হয়। পরে জানা যায়, তাঁরা আসছেন পানিহাটির একটি বিস্কুট কারখানা থেকে! ক্যাম্পের বাইরে ছিল খাবারের ব্যবস্থা। খিচুড়ি, আলুর দম। যাঁরা খুব সকাল বেরিয়েছিলেন, তাঁরা গরম খেচুড়ি খেয়েই মিছিলে পা মেলান। পাশে ছলসত্র। শিয়ালদহ স্টেশন ছিল যেন সমাবেশের দ্বিতীয় সভাস্থল। লোকে থিকথিক। পা ফেলা দায়।