মেট্রো-অ্যাপ ক্যাব অমিল: সুযোগ বুঝে চড়া দর হলুদ ট্যাক্সির
বর্তমান | ২২ জুলাই ২০২৪
সোহম কর, কলকাতা: রবিবার ছুটির দিন বলে এমনিতে শহরে ভিড় কম থাকে। তবে এই রবিবার সম্পূর্ণ অন্য ছবি। তৃণমূলের শহিদ দিবস পালন অনুষ্ঠানের জন্য থিকথিকে ভিড়। সভাস্থলে যেতে বা বাড়ি ফিরতে প্রাণান্ত অবস্থা কর্মী-সমর্থকদের। অসুবিধার মধ্যে পড়তে হল সাধারণ মানুষকেও। শহরের অন্যতম লাইফ লাইন হচ্ছে মেট্রো। এদিন মেট্রো কম চলায় ভোগান্তি আকাশ ছুঁয়েছে বলে অভিযোগ। কারণ মেট্রো চলেছে শুধু একটি রুটে, কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বর। বাকি রুটগুলি ছিল বন্ধ। এমনকী হাওড়া যাওয়ার মেট্রো চলেনি বলে চূড়ান্ত হতাশ বহু মানুষ।
এদিন বেলা বাড়তেই ভিড় পাল্লা দিয়ে গাঢ় হতে থাকে শহরে। রবীন্দ্রসদন, পার্ক স্ট্রিট, ময়দান, এসপ্ল্যানেড স্টেশনে দুপুরের দিকে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। এদিকে অ্যাপ ক্যাবের দেখা মেলেনি। মওকা বুঝে হলুদ ট্যাক্সি চেয়েছে বিপুল ভাড়া। এদিন সমাবেশ থাকার কারণে অনেকে ভেবেছিলেন মেট্রোর সংখ্যা বাড়াবে রেল। কিন্তু তা হয়নি। সারা বাংলা থেকে আসা মানুষ এদিন শহরে এসেছিলেন। সভা শেষে অনেকে বাড়ি ফেরার জন্য মেট্রো বেছে নেন। অনেকে কালীঘাট মন্দিরেও যান। স্টেশনগুলিতে ঘোষণা হচ্ছিল, ‘কেউ ভিড় করবেন না। টিকিট কাউন্টারে লাইন দিয়ে দাঁড়াবেন।’ এর পাশাপাশি মেট্রোর সময়ও জানানো হচ্ছিল। অন্যান্য ররিবারের মতোই এদিন প্রথম মেট্রো পরিষেবা দু’ঘণ্টা পরই শুরু হয়। এই রুটে সবমিলিয়ে এদিন ১৩০টি মেট্রো পরিষেবা চলাচল করেছে। যাত্রীদের বক্তব্য, ভিড় হবে এটা তো জানা কথা। কয়েকটা ট্রেন বাড়াতে পারল না? অতিরিক্ত দু-তিন ঘণ্টা মেট্রো চলাচল বাড়ালেই এত সমস্যা হতো না।’ মেট্রো যেহেতু কেন্দ্রীয় সরকারের আওতায়। তাই মেট্রোর সংখ্যা না বাড়ানোর পিছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রও দেখলেন অনেকে। মেট্রো জানিয়েছে, এদিন দুপুর তিনটে পর্যন্ত নর্থ-সাউথ রুটে এক লক্ষ ৯২ হাজার যাত্রী পরিষেবা নিয়েছেন। গত রবিবার অর্থাৎ ১৪ জুলাই দুপুর তিনটে পর্যন্ত যাত্রী হয়েছিল এক লাখ সাত হাজার। এদিন যাত্রী সংখ্যার বাড়ায় টিকিট বিক্রি করে রেলের আয় বেড়েছে। সভা শেষে মেট্রো স্টেশনগুলিতে জনতার ঢল নামে। দিনের শেষে যাত্রীসংখ্যা আরও কয়েক লাখ বৃদ্ধি পায় বলে সূত্রের দাবি। বৃষ্টি থেকে বাঁচতে অনেকেই মেট্রো স্টেশনে ভিড় করেছিলেন। চড়া রোদে নাকাল হওয়ার হাত থেকে বাঁচতে ছায়া খুঁজতেও ভরসা ছিল স্টেশনগুলি।
এদিন যাঁরা ট্যাক্সিতে যাবেন বলে ঠিক করেছিলেন, তাঁরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে সহযাত্রী খুঁজতে থাকলেন। যদি ভাড়া ভাগ করা যায়। চালকরা সুযোগ বুঝে ভাড়া বাড়িয়ে দিচ্ছিলেন। এক্সাইড মোড় থেকে চিড়িয়াখানার ভাড়া ছিল ২০০ টাকা। হাওড়া গেলে ৩০০ টাকা। মিছিল শেষে পার্ক স্ট্রিট থেকে যাদবপুরের ভাড়া চাওয়া হল ৫০০ টাকা। অ্যাপ বাইক পার্ক স্ট্রিট থেকে বালিগঞ্জ পর্যন্ত যেতে ভাড়া চাইল ২৫০ টাকা। সভা শেষ হতেই পার্ক স্ট্রিট-রবীন্দ্র সদন এলাকায় কম হলেও সরকারি বাস দেখা যায়। ট্যাক্সি বিপুল ভাড়া হাঁকার সময় সরকারি বাসগুলোই স্বস্তি দিয়েছে সাধারণ মানুষকে। এদিন সভা শেষ হওয়ার পর রাস্তা থেকে ব্যারিকেড সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে দেখা যায় পুলিসকে।