• ‘আমাদের লালবাজারে তুলে নিয়ে গেল, পিজি থেকে মরদেহ নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলাম’
    বর্তমান | ২২ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: জনসভা প্রায় শেষের পথে। পার্ক স্ট্রিট সহ সংলগ্ন রাস্তাগুলির ভিড় তখন বাড়িমুখী। ফিরতি বাসে ওঠার আগে খাওয়া-দাওয়ার পর্ব সেরে নিচ্ছেন কেউ কেউ। অনেকে বাসে উঠে অপেক্ষা করছেন সঙ্গীদের জন্য। সেরকমই একটি বাসের জানলা দিয়ে মুখ বের করে বসেছিলেন ঘোলাটে চোখের বৃদ্ধ কমলবাবু। এখন ফিরছেন? খাওয়াদাওয়া হয়েছে? কথায় কথায় জানা গেল, রবিবার গুরুপূর্ণিমা বলে তাঁর উপোস। তব কি কিছু না খেয়েই মিছিলে এসেছেন? ৭৫ বছরের মানুষটি এ প্রসঙ্গ হেসেই উড়িয়ে দিলেন। বললেন, ‘ওসব কোনও ব্যাপার না।’ কমলবাবু ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে যুব কংগ্রেসের সেই মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন। সেদিন থেকে আজও ফি-বছর এই দিনে বাড়িতে থাকতে পারেন না তিনি। দিদির বক্তব্য শুনতে ছুটে আসেন ধর্মতলায়।


    দক্ষিণ ২৪ পরগনার নেপালগঞ্জের বাসিন্দা কমলকুমার দে বলছিলেন, ‘তৃণমূল দলের জন্মের আগে থেকে মমতাদি’র সঙ্গে রয়েছি। সেই ২১ জুলাইয়ের স্মৃতি এখনও বয়ে বেড়াই। মনে আছে, আমাদের কয়েকজনকে তখন লালবাজারে নিয়ে গিয়েছে। আচমকা বাইরে গুলির শব্দ শুনলাম। কেউ একটা ছুটে এসে বলল, গুলিতে হরিদেবপুরের একজন মারা গিয়েছে।’ কমলবাবুরা তখন বাইরে আসার জন্য স্লোগান, চিৎকার-চেঁচামেচি করছিলেন। কমলবাবুর কথায়, ‘একজন পুলিসকর্মী তখন আমাদের বলে যান, বাইরে বেরবেন না। গুলি চলছে। যাই হোক, বেশ কিছুক্ষণ পর লালবাজার থেকে বেরিয়ে আমরা পিজি হাসপাতালে ছুটে গেলাম। সেখান থেকে হরিদেবপুরের যিনি মারা গিয়েছেন, তাঁর মৃতদেহ নিয়ে বাড়ি ফিরলাম আমরা।’ বয়সের ভারে আজ জর্জরিত হলেও সেই দিনের স্মৃতি ভুলতে পারেন না কমলবাবু। আরও একটা শহিদ দিবসের সমাবেশ থেকে বাড়ি ফেরার পথে সেদিনের স্মৃতিচারণ করতে পেরে দৃশ্যতই তৃপ্ত দেখাচ্ছিল ৭৫ বছর বয়সি বৃদ্ধকে।
  • Link to this news (বর্তমান)