• ঠিক যেন বড়দিন বা ইংরেজি নববর্ষ, গেট খুলতেই চিড়িয়াখানায় উপচে পড়ল ভিড়
    বর্তমান | ২২ জুলাই ২০২৪
  • স্বার্ণিক দাস, কলকাতা: অন্যান্য দিন দর্শক সংখ্যা মেরেকেটে হাজারও পার হয় না। একুশে জুলাই ভিন্ন দৃশ্য আলিপুর পশুশালায়। এদিন ফুটফল পেরিয়েছে ২২ হাজার।


    আকাশ মেঘলা, রাস্তা ভিজে। তা না হলে চিড়িয়াখানার হাল দেখে বোঝার উপায় ছিল না যে, এটা বর্ষাকাল। বড়দিন বা ইংরেজি নববর্ষের দিন সাধারণত যে ছবি দেখা যায় চিড়িয়াখানায়, সেই চিত্রই এদিন দেখা গেল ভরদুপুরে। ভিড় সামলাতে এক সময় আলিপুর থানা ও ভবানীপুর ট্রাফিক গার্ড বাড়তি ফোর্স মোতায়েন করতে বাধ্য হয়। এদিন বৃষ্টি মাথায় নিয়েই সপরিবারে চিড়িয়াখানামুখী হয় সভাস্থলে আসা মানুষের একাংশ। মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা শোনার আগে জেলা থেকে আসা মানুষজন এক ঝলক ঘুরে দেখেন পশুশালা।


    এদিন সকালে গেট খোলার আগেই চিড়িয়াখানার সামনে লম্বা লাইন পড়ে যায়। ফলে ভিড় সামলাতে সব কটি টিকিট কাউন্টারই খুলে দিতে বাধ্য হয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রচুর মানুষ শহরে এসেছিলেন। হাওড়া, শিয়ালদহ স্টেশনে নেমে অনেকেই সরাসরি চলে আসেন চিড়িয়াখানায়। কিন্তু, বাধ সাধে বৃষ্টি। চিড়িয়াখানার ভিতরে বিশেষ ছাউনি নেই। ফলে ছাতা মেললেও অনেকেই ভিজে যান। তবে বৃষ্টি তাঁদের আনন্দকে মাটি করতে পারেনি। বাঘ, সিংহ, জিরাফ, হাতি দেখতে চিড়িয়াখানায় একখাঁচা থেকে আরেক খাঁচায় ছুটে বেরিয়েছেন তাঁরা। বাদুড়িয়া থেকে এসেছিলেন সুভাষ মাল। তিনি বললেন, ‘দিদির বক্তব্য শুনতে এসেছি। অন্যবার একাই আসি। এবার রবিবার হওয়ায় সুবিধা হয়েছে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে এসেছি। ট্রেনে আসতে আসতে ছোট মেয়ে আব্দার করল চিড়িয়াখানা দেখবে। হাতে কিছুটা সময় থাকায়  চলে এলাম।’ দাদুর কাঁধে চড়ে চিড়িয়াখানা ঘুরে দেখল নদীয়ার বাসিন্দা বছর আটের ফাহিনা খাতুন। সে জানিয়েছে, ‘আমি কোনওদিন বাঘ দেখিনি। বাঘ দেখতেই এসেছিলাম। কিন্তু, দেখতে পাইনি। বৃষ্টির কারণে বাঘ বাইরেই বের হল না।’ 


    তৃণমূলের জনসভা শুরু হয়ে গেলেও ভিড় কমার কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি বিভিন্ন পর্যটনস্থলে। গঙ্গার ধারে প্রিন্সেপ ঘাট ঘোরার ক্ষেত্রেও ব্যাপক উন্মাদনা দেখা গেল। ভিতরে ঢোকার লাইন ছাড়িয়ে গিয়েছে উত্তরমুখী গেট থেকে প্রায় ১০০ মিটার পর্যন্ত। এদিন দুপুরে দফায় দফায় বৃষ্টি হওয়ায় কিছুটা তাল কাটে ভিড়-চিত্রের। শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে একটু দূরে বনভোজনের আয়োজনও দেখা গিয়েছে। ই এম বাইপাসের ধারে ক্যাপ্টেন ভেড়ির পাশে ফুটপাতের উপর লাইন দিয়ে বসে পড়েন বারাসত থেকে আসা ঘাসফুল শিবিরের একদল কর্মী। সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিল তাঁদের দু’টি বাস। সময়ে সভাস্থলে পৌঁছতে না পারায় সেখানেই বিরিয়ানির প্যাকেট খুলে বসে পড়েন তাঁরা। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় দৃশ্য দেখা গেল ইকোপার্কে। বৃষ্টি মাথায় নিয়েই সেখানে ছিল কার্যত পিকনিকের মুড। চলল মাংস দিয়ে রুটি, পরোটা খাওয়া। 
  • Link to this news (বর্তমান)