নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: হাওড়া থেকে ধর্মতলা মেট্রো চালু হওয়ার পর ধুঁকছে ওই রুটের বাসগুলো। বেশিরভাগ যাত্রীই কম খরচে, আরামের জন্য মেট্রোকেই বেছে নিচ্ছেন। তার ফলে এই রুটের বাসগুলো গভীর সমস্যায় পড়েছে। যাত্রীসংখ্যা প্রায় তলানিতে ঠেকেছে। ফলত গণপরিবহণের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের রোজগারও কমছে। তাই এই রুটের বাস শ্রমিকরা কেউ রুট বদলে অন্য রুটে কাজে যাচ্ছেন, বয়স্ক কর্মীরা কাজ ছেড়ে ফিরে যাচ্ছেন গ্রামে, খবর এমনটাই।
‘সি’ রুটের কয়েকজন বাস শ্রমিক বলছিলেন, আমাদের এই রুটের যাত্রী এখন খুবই কমে গিয়েছে। তার ফলে কমে গিয়েছে আমাদের মাইনেও। কন্ডাক্টররা প্রায় অর্ধেক মাইনে পাচ্ছেন। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের রুটে আর কেউ কাজ করতে চাইছেন না। অনেকেই শিয়ালদহ, ধূলাগড়, সাঁতরাগাছি রুটে কাজ নিয়ে চলে যাচ্ছে। ওখানকার বাসগুলোতে ভালো যাত্রী পাওয়া যায়। ওই কর্মচারী আরও বলেন, সেদিনই তো আমাদের রুটের একজন কন্ডাক্টরের সঙ্গে দেখা হল। ধূলাগড় রুটে কাজ করছেন। বললেন, এখানে অনেক ভালো কাজ হচ্ছে। ভালো মাইনেও পাওয়া যাচ্ছে। কী বলব আর!
কিন্তু শ্রমিক কমে যাওয়ার এই সমস্যা কতটা গভীরে গিয়েছে? শুধু মেট্রো নয়, এবার নিয়ম মেনে ১৫ বছরের পুরনো বাসও তুলে নিতে হবে।
হাওড়া জেলার বাস ওয়ার্কাস ইউনিয়নের নেতা বাপ্পা ঘোষ বলছিলেন, ‘৫৫, ৫৫এ, ৬১, ৮০, ৫৯ মিলিয়ে প্রায় ১২০টা বাস এখানে চলে। সেখানে মোটামুটি ৬০ থেকে ৭০টা বাস বাতিল হচ্ছে। যেহেতু করোনার সময় দু’বছর বাস চলেনি, তাই আমরা আরও সময় চেয়েছি মন্ত্রীর কাছে। তারপর মেট্রো হয়ে যাওয়ায় যাত্রী নেই। তার ফলে পরিবহণ শ্রমিকরা কাজ পাচ্ছেন না। বাইরে থেকে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে দোকানে কাজকর্ম করছেন, টোটো চালাচ্ছেন।’
একই কথা বলছিলেন জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘কৃষির পরই সবচেয়ে বেশি মানুষ পরিবহণ শিল্পে কাজ করেন। কোভিডের সময় থেকে আমরা সমস্যায় রয়েছি। কেন্দ্র-রাজ্যকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এসব দেখে নতুন করে পরিবহণ শিল্পে আর কেউ আসতে চাইছেন না। যাঁরা ছিলেন, অনেকে দেশের বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন এবং গ্রামে অন্য পেশায় যোগ দিচ্ছেন। ’