ঢাকায় আটকে ছেলে, ৩ দিন ধরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, উৎকণ্ঠায় পরিবার
এই সময় | ২২ জুলাই ২০২৪
বাংলাদেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। এর মধ্যে ঢাকায় আটকে পড়েছেন মুর্শিদাবাদের দুই মেডিক্যাল পড়ুয়া। বিমানবন্দরে আটকে রয়েছেন ঢাকা ডেল্টা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র নাসিম হাসান। নাসিম এমবিবিএসের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র। তাঁর বাড়ি হরিহরপাড়া। অন্যদিকে বাস-বিমানের টিকিট না পেয়ে ঢাকাতে আটকে রয়েছেন ইসলামপুর নজরুল পল্লির এমবিবিএসের ছাত্র তৌফিক আহম্মেদ।‘কোটা’ বিরোধী আন্দোলনে অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ। বিক্ষোভ, মিছিল, সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগে ক্রমশ জটিল হচ্ছে ওপার বাংলার পরিস্থিতি। হিংসার আবহে ইতিমধ্যেই অনির্দিষ্টকালের জন্য স্কুল-কলেজ সহ বন্ধ রয়েছে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসিনা সরকার। তাতে পুরো দুনিয়ার সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের।
ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় সে দেশে ডাক্তারি পড়তে যাওয়া পড়ুয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না পরিবারের লোকজন। তাতেই ক্রমশ উৎকণ্ঠা বাড়ছে পড়ুয়াদের পরিবারের লোকজনের। ইসলামপুরের নজরুলপল্লির তৌসিফ আহমেদ গত তিন বছর ধরে ঢাকার একটি মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস পড়ছেন। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে উৎকণ্ঠায় তাঁর পরিবারের লোকজন।
পরিবারের দাবি, বৃহস্পতিবার দুপুরে তৌসিফের সঙ্গে শেষবার কথা হয়েছিল। তারপর থেকে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। ঘটনায় উদ্বিগ্ন পরিবারের লোকজন। টেলিভিশনের পর্দায় তাঁরা চোখ রেখে বসে রয়েছেন। মাঝে মধ্যে মোবাইলে ছেলের ছবি দেখছেন। তবে দুশ্চিন্তা কাটছে না কিছুতেই।
তৌসিফের মা মানসুরা বিবি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরে ছেলের সঙ্গে শেষ কথা হয়েছে। ছেলে তখন জানিয়েছিল ওখানকার পরিস্থিতি ভীষণ খারাপ। তবে ও আমাদের জানিয়েছিল সুস্থ রয়েছে। তারপর থেকে ছেলের সঙ্গে আর কোনওভাবে যোগাযোগ করতে পারছি না।’ শনিবার বিকেলে কয়েকজন এলাকার বন্ধু বাড়ি ফিরেছে। ওদের কাছে শুনলাম ছেলে সুস্থ রয়েছে। কিন্তু, তারপরেও কিছুতেই উৎকণ্ঠা কাটছে না। এই পরিস্থিতিতে ছেলে যেন সুস্থভাবে বাড়ি ফিরে আসতে পারে প্রতিমুহূর্তে সেই দোয়া করছি।
শনিবার বিকেলেই বাংলাদেশ থেকে বাড়ি ফিরেছেন ইসলামপুরের নশিপুরের জান্নাতন নিশা মণ্ডল। তিনিও সেখানকার একটি মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস করছেন। মেয়ে বাড়ি আসায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে পরিবারের লোকজন। উল্লেখ্য, ভারতের বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার হাজারের বেশি ভারতীয় পড়ুয়াকে দেশে ফেরানো হয়েছে। বাংলাদেশের ভারতীয় দূতাবাস যোগাযোগ রাখছে পড়ুয়াদের সঙ্গে। ধাপে ধাপে তাঁদের ভারতে ফেরানোর প্রক্রিয়া চলছে।