এই সময়, ক্যানিং: রাতে সাপের কামড় খেয়ে হাসপাতালে না গিয়ে ওঝার কাছে ছুটেছিল পরিবার। সেখানে কাজ না হওয়ায় রবিবার সকালে হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই সঙ্গে দুটো মরা সাপ ডাক্তারের টেবিলে রাখলে হইচই পড়ে যায়। সাপ দু’টিকে বাড়ি থেকে ধরার পর পিটিয়েই মেরেছিলেন পরিবারের লোকজন। সাপে কাটা রোগী আপাতত বিপন্মুক্ত।রুকসোনা লস্করের বাড়ি বারুইপুরের হাড়দহ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে মশারি না টাঙিয়েই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন রুকসোনা। গভীর রাতে কিছুর আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায়। বুঝতে পারেন ঘরের মধ্যে কীটপতঙ্গ বা ওই জাতীয় কিছু ঢুকেছে। কিছু বোঝার আগেই আচমকা ঘাড়ে যন্ত্রণা অনুভব করেন। চিৎকার করে ওঠেন রুকসোনা।
বাড়ির লোকজন অন্য ঘর থেকে ছুটে এসে দ্রুত আলো জ্বালেন। দেখা যায় দু’টি সাপ ঘরের মধ্যে। সঙ্গে সঙ্গে সাপ দুটোকে পিটিয়ে মেরে ফেলেন বাড়ির লোকজন। রোকসোনাকে নিয়ে যাওয়া হয় এলাকার এক ওঝার কাছে। ওঝা কেরামতি শুরু করে দেয়। তাতে রাত গড়িয়ে যায়। রবিবার সকালে রুকসোনাকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আপাতত তিনি বিপন্মুক্ত।
তবে হাসপাতালে চিকিৎসকদের টেবিলে বাড়ির লোক যে ভাবে একটি মরা ঘরচিতি সাপ ও একটি বিষধর কালাচ সাপ রাখেন,তাতে হুলস্থুল পড়ে যায় হাসপাতালে। তাঁকে ক্যানিং হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা শুরু করে দেওয়া হয়। রুকসোনা এখন বিপন্মুক্ত। তবে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
রুকসানা লস্কর বলেন, ‘আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। সেই সময়ে টিকটিকির আওয়াজে ঘুম ভাঙে। তারপরেই দু-তিন রকমের বিকট আওয়াজ কানে আসে। এরপর হঠাৎ আমার ঘাড়ে তীব্র যন্ত্রণা। কামড়ানোর মতো ব্যথা অনুভব করি। পরে বাড়ির লোকজন দেখেন আমার ঘরে দু’টি সাপ ঢুকেছে।’
এ বিষয়ে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের অভিজ্ঞ সর্প বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সমরেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘খাদ্য ও খাদকের সম্পর্কের কারণে অনেক সময়ে রাতের অন্ধকারে পোকামাকড়, টিকটিকি, আরশোলা খেতে ঘরে ঢুকে পড়ে সাপ। এক্ষেত্রে তেমনই হয়েছে। ঘরচিতি সাপ ঢুকেছে টিকটিকি কিংবা আরশোলা খেতে। আর ঘরচিতি সাপটিকে খাওয়ার জন্য সেখানে চলে এসেছিল বিষধর কালাচ সাপটি। পরে তার মধ্যে কোনও একটি সাপ ওই মহিলাকে কামড় বসিয়েছে। এক্ষেত্রে সব সময়ে আমরা পরামর্শ দিই যে রাতে মশারি খাটিয়ে ঘুমোন। তা হলে সাপ কিংবা বিষধর কীটপতঙ্গ থেকে নিজেদের রক্ষা করা যায়।’