‘আম-আমসত্ত্ব দুইই পাব’, মমতার ‘আশা’য় জল ঢেলে কটাক্ষ মালদহের দুই বিরোধী সাংসদের
প্রতিদিন | ২২ জুলাই ২০২৪
বাবুল হক, মালদহ: লোকসভা ভোটে রাজ্যজুড়ে দলের সাফল্যে কাঁটা হয়েছে মালদহ। এই জেলা দুটি লোকসভা আসনের কোনওটি এবারও দখল করতে পারেনি শাসকদল তৃণমূল। রবিবার, একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে সেই আক্ষেপ চেপে রাখতে পারেননি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন মালদহের মানুষ ভুল বুঝলেন, তা বুঝতে পারছেন না বলেও মন্তব্য করেন। সেইসঙ্গে আশাও করেছেন যে পরেরবার মালদহের জনসমর্থন পাবেন। তাঁর কথায়, ”আম ও আমসত্ত্ব ? দুটোই পাব।” আর তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে পালটা কটাক্ষ করলেন মালদহের দুই বিরোধী সাংসদই। বিজেপির খগেন মুর্মু ও কংগ্রেসের ঈশা খান চৌধুরীর দাবি, আম-আমসত্ত্ব কিছুই পাবেন না।
মালদহ উত্তর ও মালদহ দক্ষিণ ? দুই লোকসভা কেন্দ্রে এখনও পর্যন্ত দাঁত ফোটাতে পারেনি তৃণমূল (TMC)। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে মালদহ উত্তর বিজেপি এবং মালদহ দক্ষিণ কংগ্রেসের দখলে গিয়েছে। এই ফলাফলে কপালে ভাঁজ পড়েছিল তৃণমূল নেত্রীর। একুশের শহিদ (21 July Shahid Diwas)মঞ্চে আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, ”মালদহ এবারও আমাদের ভোট দেয়নি। ওখানে কোনও আসন আমরা পাইনি। কেন যে মালদহের মানুষজন আমাদের ভুল বুঝলেন, জানি না। আপনারা যাঁদের ভোটে জেতালেন, একজন কংগ্রেস আরেকজন বিজেপি। তাঁরা কি আপনাদের জন্য কোনও কাজ করেছেন? আশা করি, যাঁরা এতদিন সমর্থন করেননি, তাঁরা এবার সমর্থন করবেন।” এর পর কিছুটা কৌতূকের সুরে বললেন, ”মালদহের আম আর আমসত্ত্ব এবার আমরাই পাব।”
আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) এই শেষ মন্তব্যের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন মালদহের (Malda) দুই বিরোধী সাংসদ। বিজেপির (BJP) খগেন মুর্মু এ প্রসঙ্গে মালদহের বন্যা, ভূমিধসের প্রসঙ্গ তুলেছেন। তাঁর মন্তব্য, ”মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মালদহে যে এত ভাঙন, বন্যা হয়, তাতে রাজ্য সরকার কী করেছে? কোনও কাজ তো করেনি। মালদহের মানুষ কেন ভোট দেবে? মালদহ থেকে আর না আম পাবেন, না আমসত্ত্ব। মালদহের মানুষ কিছুই দেবে না তাঁকে। কারণ, মালদহের মানুষ জেনে গিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের না চাকরি দেবে, না গঙ্গা ভাঙন রোধ করে দেবে।”
প্রায় একই দাবি কংগ্রেস সাংসদ (Congress MP) ঈশা খান চৌধুরীরও। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ”তৃণমূল নেতারা সাধারণ মানুষের কোটি কোটি টাকা লুট করেছে। প্রকল্পের টাকা লুট হয়েছে। গরিব মানুষের কোনও সুরাহা হয়নি। এসব মালদহের মানুষ জেনে গিয়েছেন, বুঝে গিয়েছেন। তাই তাঁরা তৃণমূলকে ভোট দেননি।” উল্লেখ্য, ফুলহার নদীর জলে মালদহের রতুয়া, মানিকচকের মতো এলাকায় গঙ্গার পাড়ে ভাঙন সমস্যা নিত্যসঙ্গী। বর্ষার মরশুমে তা আরও বেশি। স্থায়ী সমাধান এখনও অধরা। আর এখান থেকে ভোট না পাওয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্ষেপকে কটাক্ষ করতে এই মূল সমস্যাকেই হাতিয়ার করলেন দুই সাংসদ।