পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে অশান্তি-মারামারি, ধুন্ধুমার কাণ্ড মহিষাদল রাজ কলেজে
এই সময় | ২৩ জুলাই ২০২৪
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদল রাজ কলেজে একটি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার কাণ্ড। পরীক্ষার গার্ড দিচ্ছেন ওই কলেজের ইউনিয়নের সদস্যরা বলে অভিযোগ। হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে একদল পরীক্ষার্থী এবং ইউনিয়নের সদস্যরা। কলেজ চত্বরে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। ঘটনাস্থলে মহিষাদল থানার পুলিশ গেলে তাঁদেরকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস কলেজ কর্তৃপক্ষের।জানা গিয়েছে, মহিষাদল রাজ কলেজে এদিন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পরীক্ষা ছিল। হলদিয়া ল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষার সিট পড়ে মহিষাদল রাজ কলেজে। পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর দেখা যায়, সেখানে ইউনিয়নের সদস্যরা পরীক্ষার গার্ড দিচ্ছেন। এমনকী, তাঁদের পাস করিয়ে দেওয়া হবে বলে টাকাও চাওয়া হয় বলে অভিযোগ।
একাধিক অভিযোগকে কেন্দ্র করে কার্যত ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় মহিষাদল রাজ কলেজে। পরীক্ষার্থী এবং ইউনিয়ন সদস্যদের মধ্যে তুমুল হাতাহাতি শুরু হয় কিছুক্ষণের মধ্যেই। গুরুতরভাবে আহত হন বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী। ক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা কলেজ অধ্যক্ষের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। অধ্যক্ষের ঘরের দরজাও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। খবর দেওয়া হয় মহিষাদল থানায়।
মহিষাদল থানার ওসি নাড়ুগোপাল বিশ্বাসের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে গেলেও পুলিশকে ঘিরে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, এদিন পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর থেকেই গার্ড দিতে থাকে ইউনিয়নের দাদারা। পাশাপাশি, তাঁদের আরও অভিযোগ, প্রতি সেমিস্টারে পাস করিয়ে দেওয়ার জন্য এক লক্ষ থেকে ৯ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চাওয়া হয়েছে। ল কলেজের পরীক্ষার্থীরা সেকেন্ড হাফের পরীক্ষা বয়কট করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।
হলদিয়া ল কলেজের এক পরীক্ষার্থী অনন্যা ঘোষ জানান, আমরা কিছু বলতে গেলেই মারধর করছে ইউনিয়নের ছেলেরা। ইউনিয়নের ছেলেরা আমাদের পরীক্ষার জন্য ৯ লক্ষ টাকা করে চেয়েছে। এরই প্রতিবাদে আমরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান হলদিয়া ল কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ সমিত মাইতি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কলেজের পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে মহিষাদল রাজ কলেজের ইউনিয়নের সদস্যদের মধ্যে গণ্ডগোল হয়। যার জেরে হাতাহাতি পর্যন্ত হয়েছে। আমি রাজ কলেজের প্রিন্সিপালের সঙ্গে কথা বলে দেখছি যাতে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়া যায়।’ অন্যদিকে, মহিষাদল রাজ কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ গৌতম মাইতি বলেন, ‘টাকা চাওয়া হয়েছে এমন খবর আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখব। এটা খুবই নিন্দনীয়। মহিষাদল রাজ কলেজে আগে এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি, আশা করি ঘটবেও না।’ মহিষাদল রাজ কলেজের ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য প্রশান্ত বেরা জানান, ল কলেজ পড়ুয়াদের করা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। সারা বছর বিভিন্ন বাইরের কলেজের পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে আসেন। কিন্তু, এই ধরনের ঘটনা আগে ঘটেনি। পড়ুয়ারা পরিকল্পিত ভাবে কলেজে বিক্ষোভ দেখিয়েছে, ভাঙচুর করেছে। প্রিন্সিপালকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে।