মিল্টন সেন,হুগলি: হিমঘর খোলা থাকলেও বন্ধ রাখা হয়েছে আলু বেরনোর কাজ। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ীদের ডাকা কর্মবিরতির জেরে বাজারে আলুর দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অথচ খোলা রাখা হয়েছে সিঙ্গুরের আলুর আড়ত।
হিমঘর থেকে আলু বের না হলে বাজারে যোগান কমবে এটা খুবই স্বাভাবিক। আর তা শুরু হলো সোমবার থেকেই। হিমঘর থেকে শনিবার যে আলু বের করা হয়েছিল তা বাজারে প্রায় শেষের দিকে। অর্থাৎ এদিন থেকেই বেশির ভাগ বাজারে দেখা মিলবে না আলুর। আর বাজারে যেটুকু আলু মজুত আছে স্বাভাবিক কারণেই তার দাম বাড়বে, বলছেন খুচরো ব্যবসায়ী থেকে ক্রেতা সকলেই। এদিন প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক লালু মুখার্জি বলেন, উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ রাজ্যে প্রায় ৮০ হাজার আলু ব্যবসায়ী কর্মবিরতিতে সামিল হয়েছে।
২০১৪ সালে এরকম একবার হয়েছিল। ভিন রাজ্যে আলু যাওয়া আটকানো হয়েছিল। তবে এবারে নির্দেশ নেই। কিন্তু পুলিশি হয়রানি হচ্ছে রাজ্যের বর্ডারগুলোতে। সেই হয়রানি যাতে বন্ধ হয় তার জন্য এই কর্মবিরতি। মুখ্যমন্ত্রী আলু বাইরে পাঠাতে বারণ করেননি। উনি নজরদারি করতে বলেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের পর থেকে আলুর দাম অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আছে। নিয়ন্ত্রণে থাকার পরও যদি বাইরে আলু যাওয়া আটকানো হয়, তাহলে ব্যবসা হবে কি করে?
বেশকিছু আলু, যেগুলো বাইরের রাজ্যে বিক্রি হয়, কিন্তু সেই আলুর এরাজ্যে বাজার নেই। সেই কারণে ব্যবসায়ীরা কর্মবিরতি করতে বাধ্য হয়েছে। হিমঘরের ভাড়া বেড়ে যাওয়া নিয়ে এর আগে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী কথা বলতে চাওয়ায় সেই ধর্মঘট তুলে নেওয়া হয়েছিল। প্রসঙ্গত, সর্বত্র কর্মবিরতি চললেও, কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্নার বাড়ির অদূরেই রতনপুর আলুর আড়তে কর্মবিরতির কোনও প্রভাব নেই। সিঙ্গুর রতনপুর আলু ব্যবসায়ী সমিতির সহ সম্পাদক প্রহ্লাদ মন্ডল জানিয়েছেন, প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি যে ইস্যুতে কর্মবিরতি ডেকেছে তিনি সমর্থন করেন। তবুও সাধারণ মানুষের কথা ভেবে বাজার খোলা রাখা হয়েছে। অন্যথায় বাজারে আলুর দাম আগুন হয়ে যাবে। সরকারের উচিত অবিলম্বে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে সমস্যার সমাধান করা এবং যে ট্রাকগুলি আটকে আছে তাদের ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা। হাসনাবাদ থেকে আলু কিনতে আসা এক পাইকারি ক্রেতা মনসুর আলী সরদার জানিয়েছেন, তিনি আলু কিনতে এসেছিলেন, বাজার ঘুরে দেখেছেন। আলু পেলেও পরিমাণ খুবই কম। এই ভাবে চললে বাজারে যোগান দেওয়া সম্ভব হবে না। ফলে দাম বেড়ে যাবে। এদিন খোলা বাজারে জ্যোতি আলুর দাম ছিল ৩২-৩৩ টাকা। আর চন্দ্রমুখি আলু ছিল ৩৮-৪০ টাকা কিলো।