মাও নেতা অর্ণব কি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পিএইডির ক্লাস করতে পারবেন? কারা দপ্তরের চিঠিতে জটিলতা
প্রতিদিন | ২৩ জুলাই ২০২৪
সৌরভ মাজি ও অর্ক দে: যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত অর্ণব দামের এবার পিএইচডির ক্লাস করা নিয়ে জটিলতা। রাজ্যের কারা দপ্তরের পক্ষ থেকে অর্ণবের ক্লাস করার বিষয়ে পাঠানো চিঠি সোমবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে পৌঁছেছে। সেই চিঠির বয়ানেই স্পষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গিয়ে ক্লাস করা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি ব্যবহার করার মতো বিষয়গুলি নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। এমনটি ওই চিঠিতে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের ভিতরেই কোর্স করানোর বিষয়টিও বলা হয়েছে। প্রয়োজনে গাইড সংশোধনাগারে এসে বা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ক্লাস করাতে পারেন বলেও উল্লেখ রয়েছে চিঠিতে। ফলে, আজ মঙ্গলবার অর্ণব বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ক্লাস করতে পারবেন না বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
গত ১৬ জুলাই কারা দপ্তরের পক্ষ থেকে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সুপারকে অর্ণবের পিএইচডি করা সংক্রান্ত বিষয়ে একটি চিঠি দেওয়া হয়। সেই চিঠির কপি দেওয়া হয়েছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকেও। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি কাউন্সিল অফ আর্টসের আধিকারিকের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে সেই চিঠি গিয়েছে। এই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সৈয়দ তনভীর নাসরিন অর্ণবের বিষয়ে কারা দপ্তরের পাঠানো চিঠি পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অফ আর্টসের সচিব তথা ডেভেলপমেন্ট অফিসার ইন্দ্রজিৎ রায় বলেন, “অর্ণবের ভর্তির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হয়েছে। পরবর্তী ক্ষেত্রে অর্ণব কীভাবে ক্লাস করবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ তা ঠিক করবে। কারা দপ্তরের পক্ষ থেকে সমস্ত ধরনের সুযোগই রাখা হয়েছে। অর্ণবের গাইড যিনি থাকবেন তিনি এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।”
একসময়ের মাওবাদী নেতা অর্ণবের বিরুদ্ধে শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে হামলার অভিযোগ ওঠে। সেই মামলায় যাবজ্জীবন সাজাও হয়েছে। সংশোধনাগারে থেকেই অর্ণব ইতিহাসে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার জন্য আবেদন করেন। ইন্টারভিউয়ের পর মেরিট লিস্টে প্রথম স্থান দখল করেন তিনি। কাউন্সেলিং এর দিন আচমকাই স্থগিত করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উপাচার্য গৌতম চন্দ্র কারা দপ্তরের চিঠি দিয়ে জানতে চান অর্ণব কীভাবে ক্লাস করবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা কী হবে সেই সব বিষয়ে। জট কাটাতে প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ উপাচার্যের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। তার পরই জট কাটে। অর্ণব পিএইচডিতে ভর্তি হন। এবার কারা দপ্তরের চিঠিতে ফের জটিলতা তৈরি হয়েছে।
কারা দপ্তরের চিঠিতে বলা হয়েছে, কোর্সটি সংশোধনাগারের ভিতরে করানো যেতে পারে। গাইড সংশোধনাগারে এসে বা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অর্ণবকে কোর্স করাতে পারেন। দ্বিতীয়ত নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পুলিশ এসকর্ট নাও মিলতে পারে। খুব জরুরি প্রয়োজনে এসকর্ট দিয়ে সংশোধনাগারের বাইরে নিয়ে গিয়ে অর্ণব ক্লাস করতে পারে। এই কোর্স করতে প্রয়োজনীয় বইপত্রের ব্যবস্থা অর্ণব নিজেই করবেন। লাইব্রেরি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অর্ণব অনলাইনে ডিজিটাল লাইব্রেরি ব্যবহারের সুযোগ নিতে পারেন।